Short story, Features story,Novel,Poems,Pictures and social activities in Bengali language presented by Arghya Ghosh

সাহার্য্যের হাত



  এগিয়ে আসছে সাহার্য্যের হাত

                                        
                 

              ( ছেলের বেডে উদ্বিগ্ন বাবা-মা )


                               অর্ঘ্য ঘোষ




একে একে এগিয়ে আসছে সাহার্য্যের হাত । ভরসা পাচ্ছেন ক্যানসার আক্রান্ত ছাত্র সুরজিৎ ঘোষের পরিবার। শনিবার সর্বপ্রথম তার  চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল সাঁইথিয়ার আনন্দদুলাল রায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।সুরজিৎ-এর বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার বড়োঞা  থানা এলাকার সাহেবনগর গ্রামে।সে স্থানীয় আন্দুলিয়া  হাইস্কুলের দশম শ্রেণীতে পড়ে। এবার জীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষা মাধ্যমিকে বসার কথা তার।কিন্তু তার আগেই আরও একটি বড়ো পরীক্ষার সামনে পড়েছে সে।ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই মাধ্যমিকে বসা হবে তার। কিন্তু তা আদৌ তা সম্ভব হবে কিনা তা জানেন না তার পরিবারের লোকজন।

                                                                              
 
          ( টাকার প্রতীক্ষায় চলছে প্রহর গোনা )                    

            সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে সুরজিৎ-এর পায়ুদ্বারে ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপরই আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের মাথায়। কারণ চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন অস্ত্রোপচার, কেমো সহ খরচ পড়বে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। দ্রুত অস্ত্রোপচার করাতে হবে , না হলে সংক্রামণ অন্যত্রও ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।তারপরই  দিশেহারা হয়ে পড়ে গোটা পরিবার।কারণ সবকিছু বিক্রি করে মাত্র ৮০ হাজার টাকা যোগাড় করতে পেরেছেন তারা। বাকি টাকা যোগাড় করতে না পারায় ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ঘুমোতে পারছেন না প্রান্তিক চাষি তরুণবাবু এবং তার স্ত্রী ফেন্সীদেবী। না পারছেন একমাত্র সন্তানের চিকিৎসা করাতে, না পারছেন ফিরে আসতে। মাঝখান থেকে সেখানে ৪ জনের থাকা খাওয়া বাবদ সংগৃহিত টাকা জলের মতো খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাদের আক্ষেপ , চোখের সামনে ছেলেটা দিন দিন নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।আর আমরা টাকার প্রতীক্ষায় দিন গুনছি।চিকিৎসা করাতে পারছি না।আমাদের মতো অক্ষম বাব-মা যেন কোন ছেলেমেয়ের না হয়। 


                                                                           


( চিকিৎসার প্রতীক্ষায় )


                              বছর সাতেক আগে তরুণবাবুরও পায়ূদ্বারে ধরা পড়েছিল ক্যানসার। তার চিকিৎসা করাতে করাতেই কার্যত বিকিয়ে গিয়েছে ঘটিবাটি। ফের একমাত্র সন্তানের একই রোগের সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় রাতের ঘুম হারিয়ে গিয়েছে বাবা-মায়ের। ঘুম নেই আত্মীয় পরিজনের চোখেও। কি করে তার চিকিৎসা করাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। কাঠা দশেক জমি চাষ  আর দিনমজুরী করে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলে তার ৪ সদস্যের অভাবের সংসার। তরুণবাবু  নিজে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই তার ভরণপোষণ চলে মূলত বীরভূমের লাভপুরের ভোগপুরের বাসিন্দা শ্বশুর কালীচরণ ঘোষের সহযোগিতায়।

                                                                          
                         
                    ( কালীচরণবাবুর হাতে আর্থিক সাহার্য্য তুলে দিচ্ছেন শান্তনু রায় ) 
                            

         তাই টাকার সংস্থানের জন্য সকাল সন্ধ্যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু কোথাও কোনআশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। সরকারি বা বেসরকারি স্তরে যেখানে যেখানে সাহার্য্য মেলে সেখানে পৌঁছোনোর ক্ষমতা এবং কোনটাই নেই তাদের। সোস্যাল মিডিয়ায় সেই খবর জানার পরই এদিন সুরজিৎ-এর দাদু কালীচরণ ঘোষের হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন সাঁইথিয়ার আনন্দদুলাল রায় মেমোরিয়্যাল ট্রাস্টের কর্ণধার শান্তনু রায়।এই ধরণের সাহার্য্য অবশ্য  প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময় দু:স্থ ছাত্রছাত্রী , বিধবা - প্রতিবন্ধীদের সাহার্য্য করেছে ওই সংস্থা। শান্তনুবাবু জানান,  প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ও ছেলেটির চিকিৎসার জন্য ২৫,০০০ টাকা সাহার্য্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।  
                                           

         ( আসুন নিষ্পাপ এই মুখে হাসি ফোটায় )

                        একই দিনে কালিচরণবাবুর হাতে ২ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন নানুর চন্ডীদাস স্মৃতি সাধারণ পাঠাগারের গ্রন্থাগারিক অনিতা মুখোপাধ্যায়ও।ওইসব টাকা হাতে পাওয়ার পর আল্পুত গলায় কালীচরণবাবু জানান, ভাবতেই পারি নি কেউ এভাবে ডেকে সাহার্য্য করবেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে নাতি।টাকা যাবে তবে অপারেশান শুরু হবে।আমরা তো হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এবার মনে হচ্ছে সবার সহযোগিতায় নাতির চিকিৎসা করাতে পারব।



                  কিন্তু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে  যে আরও অনেক টাকা দরকার। মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করাটা আমাদের হাতে নেই।কিন্তু এই পরীক্ষাটায় আমরা ইচ্ছা করলেই সুরজিৎকে উত্তীর্ণ করে দিতেই পারি। আসুন না , নিজেদের কিছুটা সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসোর্জন দিয়ে ছেলেটাকে পাশ করিয়ে দেওয়া যায় কিনা চেষ্টা করে দেখি।    



যোগাযোগ -- ৭০৭৬৫৩৮২০৯   ( কালীচরণ ঘোষ) সাহার্য্য পাঠানোর ঠিকানা ---       চাঁদচন্দ্র মণ্ডল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া   ( উলকুণ্ডা শাখা )   IFSC নং --SBIN -- 0008726 ACC  NO -- 33909378363


       ------০-----


No comments:

Post a Comment