Short story, Features story,Novel,Poems,Pictures and social activities in Bengali language presented by Arghya Ghosh

বিয়ের একাল সেকাল--১

                   


         বিয়ের একাল - সেকাল 


                                

                                
 ( ইতিহাসের পথে সেকালের বিয়ের অন্যতম বাহন )


                         অর্ঘ্য ঘোষ

 



                                  লাল কাপড়ের ঝালর দেওয়া সামিয়ানার নিচে গোবর নিকানো তকতকে উঠোন । তার উপর বিছানো শতরঞ্জ কিংবা কম্বলে সারিবদ্ধ নিমন্ত্রিতের দল । পোড়া মাটির গেলাসে জল আর পদ্ম কিংবা শাল পাতায় খাদ্য সামগ্রী পরিবেশন করছেন কোমরে গামছা বাঁধা এলাকার কিছু উদ্যোমী যুবক । শেষ পাতে দই কিংবা টক মাখা হাত চাঁটতে চাঁটতে বের হচ্ছেন নিমন্ত্রিতরা । বিগলিত বিনয়ে গৃহকর্তা তাদের জিজ্ঞাসা করছেন, খাওয়া-দাওয়ায় কোন ত্রুটি হয়নি তো ?




                             
   বীরভূমের সাবিকী বিয়ে বাড়ির এই দৃশ্যটি এখন প্রায় ছবি হয়ে গিয়েছে ।ছবি হয়ে গিয়েছে অনেক কিছু । তাদের অন্যতম বিয়ের পদ্য। একসময় বিয়ে বাড়িতে অপরিহার্য অঙ্গ ছিল ওই পদ্য। কেমন ছিল সেই পদ্য ?  --"  হ্যালো ডিয়ার ধীরেন / আজকে তোমার বিয়ে / এলোং ছিলে ডবল হলে / লাভলি লেডি নিয়ে '।বন্ধুর বিয়েতে বন্ধুদের লেখা এই পদ্যে হয়তো কোন পদ্যগুণ নেই , কিন্তু এককালে পদ্য হিসাবেই পরিচিতি ছিল ওইসব রচনার।এখন যেমন বিয়ে বাড়িতে খাবারের আগে হাতে মেনু কার্ড ধরিয়ে দেওয়া হয় , বছর ২০/২৫ আগে তেমনই বর কিম্বা কনে যাত্রীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হত রঙিন লিফলেটের মতো তিন, চারপাতার ছাপানো কাগজ। সেই কাগজকেই বলা হত পদ্য। সেই সময় বিয়ে চূড়ান্ত হলে হাট বাজার করার মতোই পদ্য লেখার তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত। পাড়ার দাদা কাকারা কাগজ কলম নিয়ে কখনও ছন্দ মিলিয়ে কখনও বা গদ্যের ধাঁচে পদ্যের খসড়া লিখে দিতেন। পাত্র পাত্রীর আত্মীয়স্বজন বন্ধু বান্ধবের নামে ছাপা হত সেই পদ্য। জীবনে হয়তো ওই একবারই নিজেদের নাম ছাপার অক্ষরে দেখার সুযোগ পেতেন তারা।


                      
                    আবার পদ্য লেখার মাধমেই অনেকের কাব্য প্রতিভারও বিকাশ ঘটত। ছাপাখানাতেও নমুনা হিসাবে মিলত পদ্য। স্থান, কাল, পাত্র বদলে একই পদ্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন বিয়েতে ছাপিয়ে দিতেন ছাপখানা মালিকেরা।কোথাও  বাবা মাদাদু দিদিমারা পদ্যে পাত্রীকে কি ভাবে শ্বশুরঘর করতে হবে সেই উপদেশ দিয়েছেন।  আবার সমকালীন চালচিত্রও ধরা পড়েছে পদ্যে।কোন কোন পদ্যে দেখা গিয়েছে," দেখতে দেখতে ষোলটি বছর করলি যে তুই পার / চললি এবার শ্বশুর ঘরে মোদের ঘর ভরিয়ে আধার।' বলার অপেক্ষা রাখে না ওই পদ্যই বলে দেয় সেসময় মেয়েদের ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার বিধি নিষেধ ছিল না।সে পদ্যই আজ হারিয়ে গিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না ওই পদ্যের কথা।আর বিয়ের আসরে ওইসব পদের দেখা মেলে না ।খুঁজলে হয়তো পুরনো ছাপখানার তারের ফাইলে ঝুলতে দেখা যাবে রঙবেরঙের পদ্য ।




                            হারিয়ে যাচ্ছে ঘটক , নাপিতের ছড়া , লগ্নপত্রের মতো আরও অনেক কিছু । আগে গ্রামে গ্রামে মূলত পুরোহিতরা ঘটকালির কাজ করতেন । যজমানির সুবাদে তারা বিভিন্ন গ্রামে ঘুরতেন । তাই পাত্র-কিম্বা পাত্রীর খোঁজ খবর থাকত তাদের নখদর্পণে।পাত্রপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী পাত্রী কিম্বা পাত্রীপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী পাত্র যোগাড়ের অন্যতম মাধ্যমই ছিলেন ওইসব ঘটকেরা । কুষ্টি মিলিয়ে রাজযোটক বিয়ে সংঘটিত করার জন্য পাত্র-পাত্রী উভয় পক্ষের কাছেই ভালো রকম পারিশ্রমিক পেতেন তারা।  একসময় ' ঘটক বিদায় ' বলে একটি কথা চালুই ছিল বিয়ে বাড়িতে।তবে কোথাও কোথাও ওই পারিশ্রমিকের লোভেই প্রকৃত তথ্য গোপন করে বিয়ে সংঘটিত করারও অভিযোগ রয়েছে ঘটকের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে বিয়ের আসরে কিম্বা বিয়ে পরবর্তীকালে অশান্তির ঘটনাও ঘটেছে। পাশাপাশি নাপিত এবং অন্যরাও ' ঘটক বিদায়ে'র লোভে ঘটকালি শুরু করেন ।এখন  ঘটকালির সেই বিষয়টা আর নেই বললেই চলে।এখন গজিয়ে 'বিবাহ বন্ধনী' নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান । ওইসব প্রতিষ্ঠানের কাছেই লিপিবদ্ধ করা আছে পাত্র-পাত্রীদের জীবনপঞ্জী সহ বিশদ বিবরণ।রয়েছে সংবাদ মাধ্যমে শ্রেণীবদ্ধ বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা । অভিভাবকরা এখন 'বিবাহ বন্ধনী' কিন্বা সংবাদ মাধ্যমের বিজ্ঞাপন থেকেই বেছে নিচ্ছেন পচ্ছন্দসই পাত্রপাত্রী । 




                       সেকালের বিয়েতে চালু ছিল লগ্নপত্রও । পাকা দেখা সম্পূর্ণ হওয়ার পর বিয়ে চুড়ান্ত হয়ে গেলে তৈরি হত সেই লগ্নপত্র।পাত্রীপক্ষকেই সেই লগ্নপত্র তৈরি করতে হত। তুলোট কাগজে আলাতা গুলে খাগের কলমে লগ্নপত্রে লেখা হত পাত্র-পাত্রীর নাম , ঠিকানা , গোত্র ,বংশ , বর্ণ , দেনা-পাওনা সহ বিয়ের দিনক্ষণ তথা লগ্ন। সিঁদুর গুলে দেওয়া হত বেলপাতা আর রূপোর টাকার ছাপ। উভয়পক্ষের স্বাক্ষর সম্বলিত সেই লগ্নপত্রটি লাল সুতোয় বেঁধে তুলে দেওয়া হত পাত্রীপক্ষের হাতে। বর্তমানে বিষয়টিকে অনেকেই অসম্মানজনক মনে করেন। তাই লগ্নপত্রের চল বিশেষ একটা নেই । কোথাও কোথাও লগ্নপত্রের আদলে চুক্তিপত্র করা হলেও তা হয় খুব গোপনে । কারণ বিষয়টি শুধু সম্মানহানিকরই নয় , আইনবিরুদ্ধও বটে । পণ দেওয়া এবং নেওয়া বর্তমানে উভয় ক্ষেত্রেই দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় । তবে এখন কোথাও কোথাও সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও যদি কোন কারণে সামাজিক বিয়ের দেরি থাকে তাহলে রেজিস্ট্রি বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সেক্ষেত্রে চুক্তি খেলাপ জনিত কারণে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার আশংকা থাকে না । 



                           

                                         নাপিতের ছড়াও ছিল সেকালের বিয়ের একটা অপরিহার্য্য অঙ্গ। বিয়ের হাতবন্ধনের , মালাবদল , সিঁদুরদান এবং বিয়ের শেষে উভয়পক্ষের নাপিতদের ছড়া বলার রেওয়াজ ছিল । কখনও কখনও তা কবিগানের তরজার পর্যায়েও পৌঁচ্ছে যেত । নিছক নিয়ম রক্ষাই নয় , বিনোদন হিসাবেও ওইসব ছড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এখনকার মতো সে সময় পরিবহণ ব্যবস্থা অত সুলভ ছিল না। খাওয়া-দাওয়ার পর বরযাত্রীদের তাই এখনকার মতো বাড়ি ফেরারও সুযোগ ছিল না ।তাদের ফিরতে হত পরদিন সকালে বরের সঙ্গে।তাই উভয়পক্ষই রাত্রি যাপনের জন্য নিজ-নিজ নাপিতদের ছড়ার ময়দানে লড়িয়ে দিতেন। বিয়ের আসরের ওইসব ছড়া নাপিদের কাছে  গোমোক্ষণ’ হিসাবে পরিচিত ছিল। মূলত শিব-দুর্গা বা বিভিন্ন দেবদেবীর বিয়ে , নব দম্পত্তিকে আর্শিবাদই ছিল ওইসব ছড়ার প্রচলিত বাঁধা গত। তবে তরজায় বিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য প্রচলিত ছড়ার সঙ্গে নিজের উদ্ভাবনী শক্তি মিশিয়েও পরিবেশনের প্রবনতা দেখা গিয়েছে বহু নাপিতের মধ্যে।কেমন ছিল সেইসব ছড়া — ‘‘শুনুন শুনুন মহাশয়/ শুনুন দিয়া মন/ হরপার্বতীর বিবাহ কথা বহুল বচন/ এখন কলির লাভ ম্যারেজেরকথা করুন শ্রবণ/ কলিতে নয়, আদ্যঋষি প্রাচীন গার্ন্ধব্য মতে / শকুন্তলারও হয়েছিল বিয়ে দুষ্মন্তের সাথে ।’  সময় কাটানোর একটি সামগ্রীও হারিয়ে গিয়েছে বিয়ের আসর থেকে। সেসময় বরযাত্রী কিম্বা বৌভাতের খাওয়া দাওয়ার পর উপয়পক্ষের সময় কাটানোর জন্য বর এবং  বৌয়ের এর বাক্সে পোশাক , প্রসাধনী সহ অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে দেওয়া হত তাস এবং লুডো।পাত্র-পাত্রীপক্ষের লোকেরা প্রথমেই তা হাতিয়ে নিতেন।তারপর খেলার মাধ্যমেই রাত কাটিয়ে দিতেন। এখন  একেই তো উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থার দৌলতে বিয়েবাড়িতে পাত্র কিম্বা পাত্রীপক্ষের রাত্রি যাপনের প্রয়োজন  হয় না। আর হলেও হাজারো বিনোদনের ভীড়ে দরকারই হয় না তাস লুডোর।         


           বছর ১০/১৫ আগেও বাড়িতে বিয়ে কিংবা অনুষ্ঠান হলে মাস খানেক আগে থেকেই রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত । কোথায় খাওয়ানো হবে , কোথায় ছাতনাতলা বাঁধা হবে । নিমন্ত্রিতদের রাত্রিবাসের জন্য কোন প্রতিবেশীকে ধরতে হবে তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হত কর্তাদের । প্রয়োজনে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোন আত্মীয়কে আনিয়ে নেওয়া হত ।এখন আর ওই ঝক্কি পোহাতে হয় না আয়োজকদের ।নিকটবর্তী শহর এমন কি গঞ্জেও গড়ে ওঠেছে বহু অনুষ্ঠান ভবন । ২০/৩০ হাজার টাকা দিলেই ভাড়া হিসাবে ওইসব ভবন মেলে । গঞ্জ এলাকায় ৫/১০ হাজার টাকার মধ্যেও ওই পরিষেবা মেলে । সেখানে গৃহকর্তারা খাওয়া ,কনে সাজানো ,ছাতনাতলা বাঁধার ব্যবস্থা নিজেরা করতে পারেন । আবার অনুষ্ঠান ভবনের মালিককে ভার দিলে কোন ঝক্কিই পোহাতে হয়না আয়োজকদের । সব ব্যবস্থা অনুষ্ঠান ভবনের মালিকই করে দেন ।সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশী পড়ে । 


         কিন্তু তাতে অনেক গৃহকর্তাই পিছুপা হন না বলে অনুষ্ঠান ভবনের মালিকদের দাবি ।  তারা জানিয়েছেন , এখন আর কেউই ঝামেলা পোহাতে চান না । অনুষ্ঠানের আগেই শুধু নয় , পরেও কাজের জের মারতে বেশ কিছুদিন পেরিয়ে যায় । কিন্তু ২৪ ঘণ্টা আগেও দায়িত্ব দিলে আমরা যেকোন  অনুষ্ঠানের সবদিক সামলে দিতে পারি । তাই অনুষ্ঠান ভবনের চাহিদা বাড়ছে । তাদের হিসাব অনুযায়ী , বরযাত্রী সহ ১০০/১২০ জন নিমন্ত্রিতের খাওয়া সহ সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার । প্রাথমিকভাবে খরচ কিছুটা বেশি মনে হলেও অনুষ্ঠান ভবনেই অনুষ্ঠান করা ভাল ।তাদের যুক্তি , প্যাণ্ডল,লাইট,রান্নার সরঞ্জাম নিয়ে আসা ফেরত দেওয়ার ঝামেলা পোহাতে হয় না । কিছু খোঁওয়া কিংবা ভেঙ্গে যাওয়ার জন্যও কোন মাসুল গুনতে হয় না । থাকে না অনাহুত বৃদ্ধিতে ঘাটতি পড়ার আশংকাও ।সবথেকে বড়ো কথা, একদিনেই প্রায় সমস্ত ঝামেলা চুকিয়ে ফেলা যায় । বাড়িতে অনুষ্ঠানের পর কর্মী খাওয়ানো, মালপত্র ফেরত দেওয়া , জায়গা পরিষ্কার করতেই আরও কয়েকটা দিন পেরিয়ে যায় । খরচ হয় আরও বেশ কিছু টাকাও ।


            অনুষ্ঠান ভবনের পাশাপাশি জেলায় ঠাকুর তলাতেও বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সাঁইথিয়ার নন্দিকেশ্বরী, লাভপুরের ফুল্লরাতলা,তারাপীঠ,বক্রেশ্বর , বোলপুরের কঙ্কালীতলা , নলহাটির নলাটেশ্বরী ,ময়ূরেশ্বরের কলেশ্বর প্রভৃতি মন্দিরে অভিভাবকেরা তাদের ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওইসব মন্দিরের পুরোহিতরা অবশ্য জানিয়েছেন, যাদের বেশি খরচ করার সামর্থ্য নেই মুলত তারাই মন্দিরে বিয়ে দিচ্ছেন । হাতে গোনা কিছু আত্মীয় স্বজন নিয়ে একই কিংবা ভিন্ন ভিন্ন গাড়িতে হাজির হচ্ছেন পাত্রী এবং পাত্রপক্ষ ।অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা লাগোয়া  হোটেলে খাবারের বরাত দিচ্ছেন,নয়তো নিজেরা রান্না করছেন ।তাছাড়া মন্দিরে বিয়ের ক্ষেত্রে তিথি-লগ্নের তেমন বাধ্য বাধকতাও নেই ।

  
              অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিয়ের কেনাকাটাতেও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁওয়া । একসময় বিয়ের খবর পেলেই বাড়িতে হাজির হত কাপড়ের বাঁধা ফেরিওয়ালা , স্যাকরার দল । ফরমাইশ মাফিক জামাকাপড় কিংবা গয়না সরবরাহ করত তারা । সেসব আজ ইতিহাস । এখন গ্রাম গঞ্জেই গজিয়ে ওঠেছে নানা কাপড় এবং সোনার দোকান । তা স্বত্ত্বেও বিয়ের কেনাকাটা বিশেষত জামাকাপড় এবং প্রসাধনী সামগ্রী কিনতে মানুষজন নিকটবর্তী শহরেরই ছোটেন । তাই শপিং মলগুলোতে কেনাকাটার প্রবনতা বাড়ছে ।কারণ এক ছাতার তলায় রকমারি বিপণীর ওইসব প্রতিষ্ঠানে একই দিনে পচ্ছন্দমতো জিনিস কিনে ফিরতে পারছেন বিয়েবাড়ির লোকেরা।

          
                    বিয়ের এহেন পট পরিবর্তনে কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো নস্টালজিক হয়ে পড়েন পুরনোদিনের মানুষজন। নিজেদের ছেলেমেয়ের পাশাপাশি পাড়াপড়শির বিয়েতে দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করেছেন তারা । তাদের চোখে ছবির মতো আজও ভাসে সেইসব দিন ।বিয়ে মানেই তখন সাজো সাজো রব পড়ে যেত । বিয়ের আগের রাতে একদিকে বসত মিষ্টি তৈরীর ভিয়েন । অন্যদিকে বিশাল কড়াই’এ ছেঁকে ভাজা হত মাছ । তদারকিতে নিযুক্ত প্রবীনেরা দু’আঙুলে মেপে নিতেন রসের ঘনত্ব । রাধুনিকে বলতেন কতটা কড়া করে ভাজতে হবে মাছ । এখন গ্রামেও ক্যাটারারদের দাপট । এমনকি পরিবেশন করার জন্য এলাকার ছেলেরাও দিব্যি প্যান্ট-টাই পড়ে মাথা পিছু টাকা নিয়ে পরিবেশন করছে । কোমর বেঁধে পাড়ার মেয়ের বিয়ে পার করার মানসিকতাই আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে বসেছে।


      ( ক্রমশ )                  


                                                  

No comments:

Post a Comment