অনুকথার কথা
অনুকথা খানের চ্যালেঞ্জ একটা বিরাট বড়ো প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে। নানুরের কীর্ণাহার পশ্চিমপট্টির বাসিন্দা অনুকথা এবারে বোলপুরের টেকনো ইণ্ডিয়া গ্রুপ আকাডেমিয়া স্কুল থেকে ৪৭৪ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে।এবারে ৪৮০ নম্বর পেয়ে জেলায় সার্বিকভাবে প্রথম হয় রামপুরহাটের সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে অনুকথার স্থান হয়
জেলায় মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয়। কিন্তু ওই রেজাল্ট মন থেকে মেনে নিতে পারে নি জেদী মেয়েটি। সে ভিস্যুয়াল আর্ট বিষয়ে তার প্রাপ্ত নম্বরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ করে বসে। বৃহস্পতিবার রিভিউয়ের রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে। আর ওই বিষয়ে ৬ নম্বর বেড়ে তার মোট প্রাপ্ত হয়েছে ৪৮০।
তার ফলে বদলে গিয়েছে অনুকথার আগের অবস্থান। জেলায় সার্বিকভাবে যুগ্ম প্রথম স্থান অধিকারের পাশাপাশি সে রাজ্যের মেধা তালিকায় দশ নম্বরে স্থান করে নিয়েছে। হাসি ফুটেছে অনুকথা , তার বাবা অশেষ খান এবং মা লিলিদেবীর মুখে। কিন্তু সেই হাসিতে কোথাই যেন একটা বিষাদের ছাপও লুকিয়ে রয়েছে। কারণ যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হয় তখন কৃতীদের নিয়ে জনমানসে যে আগ্রহের আতিশয্য লক্ষ্য করা যায় তার ছিটেফোঁটাও কি আজ অবস্থান বদলে যাওয়া মেয়েটি পাবে ? কতজন জানতে পারবেন একটি মেয়ের এহেন অবস্থান বদলের কথা ? সংবাদ মাধ্যমের আলো সে অর্থে তো অনুকথার উপর পড়ে নি। অনুকথার বাবা - মা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি আমরা রিভিউ না করতাম? খুউব সংগত প্রশ্ন।
ওই প্রশ্নই আমাদের শিক্ষা দফতরকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে? শিক্ষা দফতর কি পারবে সেদিনের সেই আনন্দ করার দিনটা অনুকথাকে ফিরিয়ে দিতে ?? সব থেকে বড়ো প্রশ্ন হলো যদি অনুকথার মতো এত বেশী নম্বর পাওয়া মেয়ের বদলে কম নম্বর পাওয়া কোন মেয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঘটত? যদি সে ওই ৬ নম্বর কম পাওয়ার জন্যই তার পছন্দের বিষয়ে অনার্স পড়ার সুযোগ না পেত? কতজন আর সাহস করে রিভিউ করার কথা ভাবে ? তারজন্য কতজনের ভাবী জীবন পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে তার খবর আমরা কজন রাখি ?
জানি এ প্রশ্নের উত্তর হয় না। কারণ এ ঘটনা তো শুধু একটা অনুকথার ক্ষেত্রে এই প্রথম ঘটছে না। আমাদের আশেপাশে বহু মৌমিতা, অপর্ণা, আলাপন, সুরবেককে প্রত্যাশিত নম্বর না পাওয়ার জন্য মানসিক অবসাদে আত্মহননের পথ বেছে নিতে দেখেছি। আর দিন কতক আহা : উহু করার পর নতুন বিষয় পেয়ে সব ভুলে গিয়েছি। একবারও যাদের জন্য এমনটা হয় তাদের শাস্তির দাবিতে সরব হই কি? কিন্তু আমাদের সবার ঘরেই তো ছেলেমেয়ে আছে। ভাবুন তো প্রাপ্য নম্বর না পেয়ে যদি আত্মহননের পথ বেছে নেয় আমার মেয়ে ? আপনার ছেলে???
তার ফলে বদলে গিয়েছে অনুকথার আগের অবস্থান। জেলায় সার্বিকভাবে যুগ্ম প্রথম স্থান অধিকারের পাশাপাশি সে রাজ্যের মেধা তালিকায় দশ নম্বরে স্থান করে নিয়েছে। হাসি ফুটেছে অনুকথা , তার বাবা অশেষ খান এবং মা লিলিদেবীর মুখে। কিন্তু সেই হাসিতে কোথাই যেন একটা বিষাদের ছাপও লুকিয়ে রয়েছে। কারণ যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হয় তখন কৃতীদের নিয়ে জনমানসে যে আগ্রহের আতিশয্য লক্ষ্য করা যায় তার ছিটেফোঁটাও কি আজ অবস্থান বদলে যাওয়া মেয়েটি পাবে ? কতজন জানতে পারবেন একটি মেয়ের এহেন অবস্থান বদলের কথা ? সংবাদ মাধ্যমের আলো সে অর্থে তো অনুকথার উপর পড়ে নি। অনুকথার বাবা - মা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি আমরা রিভিউ না করতাম? খুউব সংগত প্রশ্ন।
ওই প্রশ্নই আমাদের শিক্ষা দফতরকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে? শিক্ষা দফতর কি পারবে সেদিনের সেই আনন্দ করার দিনটা অনুকথাকে ফিরিয়ে দিতে ?? সব থেকে বড়ো প্রশ্ন হলো যদি অনুকথার মতো এত বেশী নম্বর পাওয়া মেয়ের বদলে কম নম্বর পাওয়া কোন মেয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঘটত? যদি সে ওই ৬ নম্বর কম পাওয়ার জন্যই তার পছন্দের বিষয়ে অনার্স পড়ার সুযোগ না পেত? কতজন আর সাহস করে রিভিউ করার কথা ভাবে ? তারজন্য কতজনের ভাবী জীবন পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে তার খবর আমরা কজন রাখি ?
জানি এ প্রশ্নের উত্তর হয় না। কারণ এ ঘটনা তো শুধু একটা অনুকথার ক্ষেত্রে এই প্রথম ঘটছে না। আমাদের আশেপাশে বহু মৌমিতা, অপর্ণা, আলাপন, সুরবেককে প্রত্যাশিত নম্বর না পাওয়ার জন্য মানসিক অবসাদে আত্মহননের পথ বেছে নিতে দেখেছি। আর দিন কতক আহা : উহু করার পর নতুন বিষয় পেয়ে সব ভুলে গিয়েছি। একবারও যাদের জন্য এমনটা হয় তাদের শাস্তির দাবিতে সরব হই কি? কিন্তু আমাদের সবার ঘরেই তো ছেলেমেয়ে আছে। ভাবুন তো প্রাপ্য নম্বর না পেয়ে যদি আত্মহননের পথ বেছে নেয় আমার মেয়ে ? আপনার ছেলে???
-----০-----
পূজার পুজো
ফুল -- বেলপাতা, ফল--মিষ্টি দিয়ে পুজো করার সামর্থ্য নেই। দিনমজুরীই পুজোর অর্ঘ্য পূজা টুডুর। দিনমজুরী করেই বাগদেবীর সাধনা করে চলেছে সে। নানুরের হাটসেরান্দী গ্রামে এক চিলতে মাটির বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসার পূজাদের। অর্থাভাবে সে বাড়ির চালেও সময় মতো খড় জোটে না। বর্ষায় তাই চরম কষ্ট হয়।
দারিদ্র সীমার নীচে বাস করা স্বত্ত্বেও মেলেনি নিজস্ব বৈদ্যুতিক সংযোগ। বাবা--মায়ের দিনমজুরীর আয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলে তাদের ৫ সদস্যের সংসার। অর্থাভাবে অষ্টম শ্রেণীর পরই বোনকে পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়েছে। ভাই তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় অর্থাভাবে পড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দেয় পূজারও। তখন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে তাকে ছুটির দিনে তো বটেই , মাঝে মধ্যে স্কুল কামাই করেও দিনমজুরী করতে হয়েছে। যাবতীয় প্রতিকূলতার সংগে লড়াই করেই সে সারস্বত সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছে।
এ যাবৎ নানুর ব্লকে হাতে গোনা যে কয়েকজন আদিবাসী মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে পূজা তাদের অন্যতম। সে এবারে হাটসেরান্দী হাইস্কুল থেকে কলা বিভাগে ৪৩৯ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। কেবল ইংরাজিতেই টিউশানি জুটেছিল তার। বলার অপেক্ষা রাখে না স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েদের মতো আরও কয়েকটি বিষয়ে টিউশানি আর পড়াশোনার অনুকূল পরিবেশ পেলে পূজা আরও ভালো রেজাল্ট করতে পারত। আদিবাসীদের শিক্ষার জন্য নানা গালভরা প্রকল্পের কথা শুনেছে পূজা। কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও পৌঁছোয় নি তাদের হতদরিদ্র পরিবারে। এমন কি পূজার এই লড়াইয়ের খবর জানা নেই ব্লক প্রশাসনের, জানা নেই জেলা শিক্ষা দফতরেরও। এমনকি জানেন না এখন জেলার নাড়ীনক্ষত্র যার নখ দর্পণে, গ্রামের একসময়ের ভূমিপুত্র সেই " কংসের ভাগ্নে'ও।
তাই দিনমজুরীর উপর ভরসা করেই উচ্চ শিক্ষার সিঁড়িতে পা রাখতে হয়েছে তাকে। ভবিষতে শিক্ষিকা হতে চাই সে। তাই পড়াশোনার জন্য ফের দিনমজুরীকেই ভরসা করেছে সে। তবে কোন সরকারি সহায়তা না জুটুক, দুর্দিনে তার পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে নিয়োজিত জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা " নতুন সকাল"। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই পূজার। ওই সংস্থাই ক্লাস এইট থেকে তাকে বইপত্র এবং মাঝেমধ্যে আর্থিক সাহার্য্য যুগিয়েছে। ওই সংস্থারই সদস্য গ্রামেরই অমিয় জ্যেঠু কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য দিয়েছেন ২০০০ টাকা। ভর্তির জন্য লেগেছে ৩৬০০ টাকা।বাকিটা দিনমজুরী করে যোগাড় হয়েছে।
দারিদ্র সীমার নীচে বাস করা স্বত্ত্বেও মেলেনি নিজস্ব বৈদ্যুতিক সংযোগ। বাবা--মায়ের দিনমজুরীর আয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলে তাদের ৫ সদস্যের সংসার। অর্থাভাবে অষ্টম শ্রেণীর পরই বোনকে পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়েছে। ভাই তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। অষ্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় অর্থাভাবে পড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দেয় পূজারও। তখন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে তাকে ছুটির দিনে তো বটেই , মাঝে মধ্যে স্কুল কামাই করেও দিনমজুরী করতে হয়েছে। যাবতীয় প্রতিকূলতার সংগে লড়াই করেই সে সারস্বত সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছে।
এ যাবৎ নানুর ব্লকে হাতে গোনা যে কয়েকজন আদিবাসী মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে পূজা তাদের অন্যতম। সে এবারে হাটসেরান্দী হাইস্কুল থেকে কলা বিভাগে ৪৩৯ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। কেবল ইংরাজিতেই টিউশানি জুটেছিল তার। বলার অপেক্ষা রাখে না স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েদের মতো আরও কয়েকটি বিষয়ে টিউশানি আর পড়াশোনার অনুকূল পরিবেশ পেলে পূজা আরও ভালো রেজাল্ট করতে পারত। আদিবাসীদের শিক্ষার জন্য নানা গালভরা প্রকল্পের কথা শুনেছে পূজা। কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও পৌঁছোয় নি তাদের হতদরিদ্র পরিবারে। এমন কি পূজার এই লড়াইয়ের খবর জানা নেই ব্লক প্রশাসনের, জানা নেই জেলা শিক্ষা দফতরেরও। এমনকি জানেন না এখন জেলার নাড়ীনক্ষত্র যার নখ দর্পণে, গ্রামের একসময়ের ভূমিপুত্র সেই " কংসের ভাগ্নে'ও।
তাই দিনমজুরীর উপর ভরসা করেই উচ্চ শিক্ষার সিঁড়িতে পা রাখতে হয়েছে তাকে। ভবিষতে শিক্ষিকা হতে চাই সে। তাই পড়াশোনার জন্য ফের দিনমজুরীকেই ভরসা করেছে সে। তবে কোন সরকারি সহায়তা না জুটুক, দুর্দিনে তার পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে নিয়োজিত জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা " নতুন সকাল"। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই পূজার। ওই সংস্থাই ক্লাস এইট থেকে তাকে বইপত্র এবং মাঝেমধ্যে আর্থিক সাহার্য্য যুগিয়েছে। ওই সংস্থারই সদস্য গ্রামেরই অমিয় জ্যেঠু কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য দিয়েছেন ২০০০ টাকা। ভর্তির জন্য লেগেছে ৩৬০০ টাকা।বাকিটা দিনমজুরী করে যোগাড় হয়েছে।
মাধ্যমিকপর্যন্ত গ্রামের মহিমা স্যর আর উচ্চ মাধ্যমিকে নবদ্বীপ স্যর বিনা বেতনে ইংরাজী পড়িয়েছেন। নদী সাঁতরে এবার সাগরে পড়েছে পূজা। প্রতিকূলতার স্রোতটা আরও তীব্র। তবুও পিছু হঠতে রাজী নয় সে ।দৃঢ়তার সংগে জানিয়েছে, প্রয়োজনে দিনমজুরী করেই পড়া চালিয়ে যাব। আসুন, পূজার এই সাধনাকে কুর্নিশ জানাই।
---০---
ফিরল হাসি
হাসি ফুটল বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের তেরাতরী গ্রামের গোপাল দাসের মুখে। গোপাল স্থানীয় লোকপাড়া হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। তার বাবা চন্দন দাস যৎসামান্য বেতনে একটি তেলকলে কাজ করেন। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর হাল। গোপাল ছোট থেকেই কানে শুনতে পায় না। এজন্য ক্রমাগত পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছিল। বিষয়টি জানার পর বছর চারেক আগে তদানীন্তন বি,ডি,ও বাবুলাল মাহাতো তাকে একটি কানে শোনার যন্ত্র কেনার টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু বছর খানেকের মাথায় স্কুলে বন্ধুদের সংগে খেলার সময় পড়ে গিয়ে সেই যন্ত্রটি ভেঙে যায়। তখন ফের সমস্যায় পড়ে গোপাল। বাবার তো যন্ত্র কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। অগত্যা স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রসাশনের সকল স্তরে সাহার্য্যের আর্জি জানায় সে। এমন কি ছেলের সমস্যার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠান চন্দনবাবু। কিন্তু কোথাও কোন সাড়া মেলে নি। সংবাদ মাধ্যমে গোপালের সমস্যার কথা জেনে সাহার্য্যের হাত বাড়িয়ে দেন সিউড়ির বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চন্দনবাবুর হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকা। সেই টাকায় কেনা যন্ত্র কানে লাগিয়ে পড়াশোনা করে গোপাল নবম থেকে আজ দ্বাদশ শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
মাস দুয়েক আগে সেই যন্ত্রটিও পুরোপুরি বিকল হয়ে যাওয়ায় ফের সমস্যায় পড়ে সে। কানে শুনতে না পাওয়ায় স্কুল, টিউশানি পড়তে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই একটি কানে শোনার একটি যন্ত্রের জন্য সে মাস দেড়েক আগে ফের প্রশাসনের সকল স্তরে, এমন কি এলাকার বিধায়কের কাছও আর্জি জানায়। কিন্তু সর্বত্রই শুধু 'হচ্ছে হবে' আশ্বাস মিলেছে, কাজের কাজ কিছু হয় নি। এর ফলে মনমরা হয়ে পড়ে গোপাল।সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর পড়ে এবারে এগিয়ে আসে সাঁইথিয়ার আনন্দদুলাল রায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।ওই সংস্থার কর্নধার শান্তনু রায় বুধবার গোপালের বাড়ি গিয়ে এক সংগে দুটি কানে শোনার যন্ত্র সহ বছর খানের চলার মতো ব্যাটারি দিয়ে এসেছেন।
তারপরই হাসি ফিরেছে গোপালের মুখে। প্রশ্ন জাগে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যে কাজটি ১২ ঘন্টার মধ্যে করতে পারে সেই কাজটি প্রশাসন কেন দুমাসেও করে উঠতে পারে না? কেন উপলব্ধি করতে পারে না শ্রবণযন্ত্র কানে পড়ার কোন অলংকার নয়। একজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কাছে একটা দিন কানে শুনতে না পাওয়াটা কতটা দুশ্চিন্তার। কেন এইসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় বরাদ্দ হবে না ? নিন্দুকরা অবশ্য বলছেন, তাহলে যে অমুক উৎসব, তমুক দিবসের নামে অস্তিত্ব জাহিরের মোচ্ছব হবে না।
কিন্তু বছর খানেকের মাথায় স্কুলে বন্ধুদের সংগে খেলার সময় পড়ে গিয়ে সেই যন্ত্রটি ভেঙে যায়। তখন ফের সমস্যায় পড়ে গোপাল। বাবার তো যন্ত্র কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। অগত্যা স্কুলের শিক্ষক থেকে প্রসাশনের সকল স্তরে সাহার্য্যের আর্জি জানায় সে। এমন কি ছেলের সমস্যার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠান চন্দনবাবু। কিন্তু কোথাও কোন সাড়া মেলে নি। সংবাদ মাধ্যমে গোপালের সমস্যার কথা জেনে সাহার্য্যের হাত বাড়িয়ে দেন সিউড়ির বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চন্দনবাবুর হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকা। সেই টাকায় কেনা যন্ত্র কানে লাগিয়ে পড়াশোনা করে গোপাল নবম থেকে আজ দ্বাদশ শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
মাস দুয়েক আগে সেই যন্ত্রটিও পুরোপুরি বিকল হয়ে যাওয়ায় ফের সমস্যায় পড়ে সে। কানে শুনতে না পাওয়ায় স্কুল, টিউশানি পড়তে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই একটি কানে শোনার একটি যন্ত্রের জন্য সে মাস দেড়েক আগে ফের প্রশাসনের সকল স্তরে, এমন কি এলাকার বিধায়কের কাছও আর্জি জানায়। কিন্তু সর্বত্রই শুধু 'হচ্ছে হবে' আশ্বাস মিলেছে, কাজের কাজ কিছু হয় নি। এর ফলে মনমরা হয়ে পড়ে গোপাল।সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর পড়ে এবারে এগিয়ে আসে সাঁইথিয়ার আনন্দদুলাল রায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।ওই সংস্থার কর্নধার শান্তনু রায় বুধবার গোপালের বাড়ি গিয়ে এক সংগে দুটি কানে শোনার যন্ত্র সহ বছর খানের চলার মতো ব্যাটারি দিয়ে এসেছেন।
তারপরই হাসি ফিরেছে গোপালের মুখে। প্রশ্ন জাগে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যে কাজটি ১২ ঘন্টার মধ্যে করতে পারে সেই কাজটি প্রশাসন কেন দুমাসেও করে উঠতে পারে না? কেন উপলব্ধি করতে পারে না শ্রবণযন্ত্র কানে পড়ার কোন অলংকার নয়। একজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কাছে একটা দিন কানে শুনতে না পাওয়াটা কতটা দুশ্চিন্তার। কেন এইসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় বরাদ্দ হবে না ? নিন্দুকরা অবশ্য বলছেন, তাহলে যে অমুক উৎসব, তমুক দিবসের নামে অস্তিত্ব জাহিরের মোচ্ছব হবে না।
No comments:
Post a Comment