লজ্জা
বিধ্বস্ত সাংবাদিক অক্ষয় ধীবর আর আহত অঞ্জন দে
তখনও চলছে মস্তকমুণ্ডণ বিধ্বস্ত সাংবাদিক অক্ষয় ধীবর আর আহত অঞ্জন দে
অর্ঘ্য ঘোষ
পুলিশের সামনেই ফের শাসক দলের মদত পুষ্ট একটি ক্লাবের কর্মকর্তারা বেধড়ক মারধোর করল সাংবাদিক এবং চিত্র সাংবাদিকদের। কেড়ে নেওয়া হল ক্যামরাও। থানার খোদ আই , সি গিয়েও উদ্ধার করতে পারলেন না সেই ক্যামেরা।
সম্প্রতি ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুর এলাকায়। ওই এলাকার একটি ক্লাবের নির্মীয়মাণ পুজো মন্ডপে কয়েকটি বাচ্চা ছেলে দুষ্টুমি করছিল বলে কর্মকর্তারা নাকি তাদের জোর করে মাথা ন্যাড়া করছিলেন।চূড়ান্ত অমানবিক সেই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিক অক্ষয় ধীবর এবং প্রীতম দাস। তারা কেন বাচ্চাদের ন্যাড়া করছেন তা জিজ্ঞাসা করতেই তেড়েফুঁড়ে ওঠেন ক্লাব কর্তারা। বলেন , ওরা মন্ডপে উঠে নেশা করছিল , সেইজন্য উচিত শিক্ষা দিতেই ন্যাড়া করা হচ্ছে। প্রত্যুত্তরে সাংবাদিক বলেন , তার জন্য পুলিশ -প্রশাসন আছে , ওদের বাবা- মা আছেন, তাদের না জানিয়ে এভাবে আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না ! আর যায় কোথাই ? খিস্তি খেউরের বন্যা বয়ে যায়।পাড়ার মহিলাদেরও লেলিয়ে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে বেশ কিছু পুলিশ সহ রামপুরহাট থানার দুই পুলিশ অফিসার পৌঁছোন ঘটনাস্থলে। তাদের সামনেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বেধড়ক মারধোর শুরু হয়। ছিঁড়ে দেওয়া হয় পোশাক। কেড়ে নেওয়া হয় ক্যামেরাও। খবর পেয়ে অন্যান্য সাংবাদিকরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্ত হন। রাত্রি ১১ পর্যন্ত বিধ্বস্ত সাংবাদিককে আটকে রাখা হয় ক্লাবঘরে।তারপর আই, সি গিয়ে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক, সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই শ্লীলতাহানির মামলা দায়েরের আশ্বাস দিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তাকে।
সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা নতুন কিছু নয়। আগেও ছিল , হয়তো ভবিষতেও থাকবে। কিন্তু আশংকাটা অন্য জায়গায়। নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সাংবাদিককের ঘাড়েই শ্লীলতাহানি কিম্বা ঘুষ নেওয়ার মতো অভিযোগ চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা যে হারে বাড়ছে তাতে করে গণতন্ত্রের শেষতম স্তম্ভটিও আর কতদিন খাড়া থাকবে তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।আক্রান্তকে রক্ষা করা পুলিশ - প্রশাসন তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কিন্তু তাদেরই যখন ক্ষেত্র বিশেষে ঠুঁটো জগনাথ হয়ে থাকতে দেখি তখন রাগ নয় , বড়ো লজ্জা হয় ।এত লজ্জা আমরা রাখব কোথাই ???????
----০----
এই আঁধারে
নিগৃহিত অক্ষয় ধীবর
আহত অঞ্জন দে
অর্ঘ্য ঘোষ
খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হল। তার আগে জনমত তৈরি করতে মাইক যোগে সারা শহরে ফলাও করে প্রচারও করা হল সাজানো অভিযোগের কথা। অভিযোগটি করলেন বীরভূমের রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুর এলাকার শাসক দলের ঘনিষ্ঠ এক দূর্গাপুজো কমিটির কর্মকর্তার স্ত্রী। সম্প্রতি পুলিশের সামনেই ওই পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের হাতে বেধড়ক মার খান সাংবাদিক অক্ষয় ধীবর এবং অঞ্জন দে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
শুধু মেরেই ক্ষান্ত হন নি পুজো কমিটির ওই সব কর্তারা। কেড়ে নেন দু'জনের ক্যামেরাও। পুলিশ সে ক্যামেরা উদ্ধার করতে পারে নি। ররং পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি মেনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়েরের আশ্বাস দিয়ে রাত্রি ১১ টা নাগাদ দু'জনকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয় পুলিশ ।সাংবাদিকদের অপরাধটা কি ? তারা খবর পেয়েছিলেন ওই পুজো কমিটির লোকেরা নাকি তাদের মন্ডপে ওঠার জন্য পাঁচজন নাবালককে বেঁধে রেখে জোর করে মাথা ন্যাড়া করছেন। সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রোশের মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। পুজো কমিটির লোকেরা তাদের পিছনে পাড়ার লোক এমন কি মহিলাদেরও লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। আর তারা পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধোর করে দীর্ঘক্ষণ ঘরে আটকে রাখেন। ন্যাড়া করার পিছনে অবশ্য ওইসব কর্মকর্তারা একটা যুক্তি খাড়া করেছিলেন।
তাদের দাবি ছিল , ওইসব নাবালকেরা নাকি তাদের মন্ডপে উঠে নেশা করছিল। যদি ধরেই নেওয়া যায় তাদের দাবি সত্যি তাহলেও কি ওই অমানবিক কাজটা করা যায় ? জানি এ প্রশ্নের মিলবে না। কারণ সংবাদ মাধ্যমে ছবি, ভিডিও ক্লিপিংস সহ ওই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরও কোন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর শোনা যায় নি।এগিয়ে আসে নি শিশু কল্যাণে কাজ করা কোন সংস্থা কিম্বা মানবাধিকার কমিশন। অথচ আসাটা জরুরী ছিল। সাংবাদিকরা না হয় মারটা হজম করেই নিলেন। সে তো হামেশাই নিতে হয়। তাই তারা বিষয়টি পেশাগত ঝঞ্ঝাট বলেই গণ্য করেন।কিন্তু বাচ্চাগুলো ? তাদের পাশে কে দাঁড়াবে ? ঘটা করে শিশুদিবস পালনের নামে কোটি কোটি টাকার শ্রাদ্ধ হয়।কোটি কোটি টাকা খরচ হয় শিশু কল্যাণ প্রকল্পে। তাহলে ওইসব শিশুরা সেই কল্যাণ যজ্ঞের বাইরে থেকে গেল কি করে ? কি করেই বা নেশার সামগ্রী তুলে নিল হাতে ? এটা যাদের দেখার কথা , তারা তাদের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করলেই তো আর সাংবাদিকদের মার খেতে ছুটতে হয় না। ফাঁসতে হয় না মিথ্যা মামলায়।
পুলিশ এক্ষেত্রে কত সহজেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে নিল। সেটাও হতেই পারে। অভিযোগ হলে যে কারও বিরুদ্ধেই মামলা করতে পারে পুলিশ। কেউই আইনের উর্দ্ধে নয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে , অনেক সময় প্রকৃত নির্যাতিতা দিনের পর দিন থানায় ঘুরে ঘুরেও ওই জাতীয় অভিযোগ লেখাতে পারেন না। সেক্ষেত্রে পুলিশ বলে , খতিয়ে দেখে তবেই অভিযোগ নেওয়া হবে। বলাবাহুল্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই খতিয়ে দেখার আর সময় হয় না পুলিশের। শেষ পর্যন্ত হতাশায় আর থানা মুখো হন না নির্যাতিতা। প্রশ্ন জাগে , এক্ষেত্রে পুজো কমিটির লোকেরা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলেই কি পুলিশের এত তৎপড়তা ? কেন পুলিশ খতিয়ে দেখবে না সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই সাংবাদিকের হাতে ওই মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ কতটা যুক্তিযুক্ত ? রাতে মহিলার কাছে কি ভাবে পৌঁছোলেন সাংবাদিকরা ? নাকি মহিলাই পৌঁছোলেন সাংবাদিকদের কাছে ? কেনই বা কাছাকাছি হতে হল তাদের। তাহলেই তো সব দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়।সর্বোপরি পুলিশ যখন ঘটনার চলাকালীন একটা বড়ো সময় ঘটনাস্থলেই ছিল।
দুর্ভাগ্যের বিষয় , সেদিকটা পুলিশ খতিয়ে দেখার কোন প্রয়োজনই বোধ করে নি ।মারধোর খাওয়ার পাশাপাশি মিথ্যা মামলায় ফাঁসাটাও সাংবাদিকদের কাছে পেশাগত ঝঞ্ঝাটেরই সামিল। কিন্তু সমাজের পক্ষে তা কিন্তু মোটেই সুখকর নয়।বিরোধীদল কার্যত ঘর ঢুকে গিয়েছে। আইনের রক্ষকরা শাসকদলের ক্রীড়ানকে পরিনত হয়েছেন। শুধু কতিপয় সাংবাদিক প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে যাবতীয় অনাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে অসম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যা মামলা দায়ের হলে তারা সেই লড়াইটা করবেন কখন ? লড়াই করবেন , না শুধু আদালতেই ছোটাছুটি করবেন ? এরপর কারও বিরুদ্ধে খরবের পরিস্থিতি তৈরি হলেই তো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রবণতা বেড়েই চলবে। ধর্ষকের বিরুদ্ধে খবর করতে গেলে সে'ই কাউকে ধরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করাবে।দুনীতিগ্রস্থ নেতার বিরুদ্ধে খবর করতে গেলে সেই নেতাই তোলাবাজির অভিযোগ তুলবেন। আর তোলাবাজ তুলবেন ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ। অবশিষ্ট আলোটুকুও হারিয়ে যাবে নিঃসীম অন্ধকারে। সেই অন্ধকারে আমরা কোথাই দাঁড়াব ?????
শুধু মেরেই ক্ষান্ত হন নি পুজো কমিটির ওই সব কর্তারা। কেড়ে নেন দু'জনের ক্যামেরাও। পুলিশ সে ক্যামেরা উদ্ধার করতে পারে নি। ররং পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি মেনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা দায়েরের আশ্বাস দিয়ে রাত্রি ১১ টা নাগাদ দু'জনকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয় পুলিশ ।সাংবাদিকদের অপরাধটা কি ? তারা খবর পেয়েছিলেন ওই পুজো কমিটির লোকেরা নাকি তাদের মন্ডপে ওঠার জন্য পাঁচজন নাবালককে বেঁধে রেখে জোর করে মাথা ন্যাড়া করছেন। সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রোশের মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। পুজো কমিটির লোকেরা তাদের পিছনে পাড়ার লোক এমন কি মহিলাদেরও লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। আর তারা পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধোর করে দীর্ঘক্ষণ ঘরে আটকে রাখেন। ন্যাড়া করার পিছনে অবশ্য ওইসব কর্মকর্তারা একটা যুক্তি খাড়া করেছিলেন।
তাদের দাবি ছিল , ওইসব নাবালকেরা নাকি তাদের মন্ডপে উঠে নেশা করছিল। যদি ধরেই নেওয়া যায় তাদের দাবি সত্যি তাহলেও কি ওই অমানবিক কাজটা করা যায় ? জানি এ প্রশ্নের মিলবে না। কারণ সংবাদ মাধ্যমে ছবি, ভিডিও ক্লিপিংস সহ ওই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরও কোন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর শোনা যায় নি।এগিয়ে আসে নি শিশু কল্যাণে কাজ করা কোন সংস্থা কিম্বা মানবাধিকার কমিশন। অথচ আসাটা জরুরী ছিল। সাংবাদিকরা না হয় মারটা হজম করেই নিলেন। সে তো হামেশাই নিতে হয়। তাই তারা বিষয়টি পেশাগত ঝঞ্ঝাট বলেই গণ্য করেন।কিন্তু বাচ্চাগুলো ? তাদের পাশে কে দাঁড়াবে ? ঘটা করে শিশুদিবস পালনের নামে কোটি কোটি টাকার শ্রাদ্ধ হয়।কোটি কোটি টাকা খরচ হয় শিশু কল্যাণ প্রকল্পে। তাহলে ওইসব শিশুরা সেই কল্যাণ যজ্ঞের বাইরে থেকে গেল কি করে ? কি করেই বা নেশার সামগ্রী তুলে নিল হাতে ? এটা যাদের দেখার কথা , তারা তাদের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করলেই তো আর সাংবাদিকদের মার খেতে ছুটতে হয় না। ফাঁসতে হয় না মিথ্যা মামলায়।
পুলিশ এক্ষেত্রে কত সহজেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে নিল। সেটাও হতেই পারে। অভিযোগ হলে যে কারও বিরুদ্ধেই মামলা করতে পারে পুলিশ। কেউই আইনের উর্দ্ধে নয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে , অনেক সময় প্রকৃত নির্যাতিতা দিনের পর দিন থানায় ঘুরে ঘুরেও ওই জাতীয় অভিযোগ লেখাতে পারেন না। সেক্ষেত্রে পুলিশ বলে , খতিয়ে দেখে তবেই অভিযোগ নেওয়া হবে। বলাবাহুল্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই খতিয়ে দেখার আর সময় হয় না পুলিশের। শেষ পর্যন্ত হতাশায় আর থানা মুখো হন না নির্যাতিতা। প্রশ্ন জাগে , এক্ষেত্রে পুজো কমিটির লোকেরা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলেই কি পুলিশের এত তৎপড়তা ? কেন পুলিশ খতিয়ে দেখবে না সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই সাংবাদিকের হাতে ওই মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ কতটা যুক্তিযুক্ত ? রাতে মহিলার কাছে কি ভাবে পৌঁছোলেন সাংবাদিকরা ? নাকি মহিলাই পৌঁছোলেন সাংবাদিকদের কাছে ? কেনই বা কাছাকাছি হতে হল তাদের। তাহলেই তো সব দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়।সর্বোপরি পুলিশ যখন ঘটনার চলাকালীন একটা বড়ো সময় ঘটনাস্থলেই ছিল।
দুর্ভাগ্যের বিষয় , সেদিকটা পুলিশ খতিয়ে দেখার কোন প্রয়োজনই বোধ করে নি ।মারধোর খাওয়ার পাশাপাশি মিথ্যা মামলায় ফাঁসাটাও সাংবাদিকদের কাছে পেশাগত ঝঞ্ঝাটেরই সামিল। কিন্তু সমাজের পক্ষে তা কিন্তু মোটেই সুখকর নয়।বিরোধীদল কার্যত ঘর ঢুকে গিয়েছে। আইনের রক্ষকরা শাসকদলের ক্রীড়ানকে পরিনত হয়েছেন। শুধু কতিপয় সাংবাদিক প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে যাবতীয় অনাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে অসম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যা মামলা দায়ের হলে তারা সেই লড়াইটা করবেন কখন ? লড়াই করবেন , না শুধু আদালতেই ছোটাছুটি করবেন ? এরপর কারও বিরুদ্ধে খরবের পরিস্থিতি তৈরি হলেই তো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রবণতা বেড়েই চলবে। ধর্ষকের বিরুদ্ধে খবর করতে গেলে সে'ই কাউকে ধরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করাবে।দুনীতিগ্রস্থ নেতার বিরুদ্ধে খবর করতে গেলে সেই নেতাই তোলাবাজির অভিযোগ তুলবেন। আর তোলাবাজ তুলবেন ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ। অবশিষ্ট আলোটুকুও হারিয়ে যাবে নিঃসীম অন্ধকারে। সেই অন্ধকারে আমরা কোথাই দাঁড়াব ?????
------০------
ভাবের ঘরে চুরি
চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে বীরভূমের রামপুরহাট এলাকার এক দলীয় নেতাকে সম্প্রতি বহিস্কার করেছে শাসকদল। এ বড়ো আশার কথা। সংবাদ মাধ্যমে যে দলের তাবড় তাবড় নতা মন্ত্রীদের বাণ্ডিল বান্ডিল টাকা নেওয়ার ছবি দেখার পরও বহাল তবিয়তে স্বপদে বহাল থাকতে দেখা যায় সেই দলের কোন জেলা নেতাকে দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কৃত হতে দেখে আশার সঞ্চার হয় বৈকি।
আবার হতাশও হতে হয়। বহিস্কৃত হওয়ার পর ওই নেতা সংবাদ মাধ্যমে কার্যত হাটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছেন। শুধু হাটে হাড়িই ভাঙে নি , পরোক্ষে দল এবং প্রশাসনকে খাদের কিনারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন তিনি। সংবাদ মাধম্যে কি বলেছেন ওই নেতা ? দলের অন্য এক নেতার মেয়ের চাকরির সুপারিশের প্রেক্ষিতে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন," আমি তো বলেইছি টাকা ছাড়া চাকরি হবে না। তবে দলের নেতার মেয়ে তাই টাকাটা কম নিতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না বহিস্কৃত ওই নেতার স্বীকারোক্তি শাসকদল এবং প্রসাশনকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
জনমানসে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে , তাহলে চাকরির জন্য কাকে টাকা লাগে? নেতাদের ছেলে-মেয়ের জন্য চাকরির জন্য সুপারিশও চলে? এক্ষেত্রে অবশ্য একটি সরলীকরণ তত্ত্ব শাসকদল এবং প্রশাসকের মনে সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে। নিজে অভিযুক্ত হওয়ার পর অনেকেই তো অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন -- এই তত্ত্ব শাসক এবং প্রশাসককে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। কিন্তু আমজনতার প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, সোস্যাল মিডিয়ায় কৌতুক নক্সা করে যেখানে জেলে যাওয়ার নজির রয়েছে সেখানে কেন সংবাদ মাধ্যমে শাসক এবং প্রশাসকের মুখে একরাশ চুনকালি মাখিয়ে পার পেয়ে যাবেন একজন বহিস্কৃত নেতা ?
কেন তাকে গ্রেফতারের পর জেরা করে চাকরির নামে টাকা নেওয়ার সেই মুল পান্ডাটির হদিশ জানার চেষ্টা করা হবে না? এ প্রশ্নের জবাব শোষক কিম্বা প্রশাসকের কাছে মেলে না। তাই আমজনতার সংশয় , কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোবে না তো ? দুনীতি - স্বজনপোষণ নতুন কোন ঘটনা নয়। ছিল, আছে হয়তো থাকবেও। রাজা -- বাদশাহের আমল থেকে বহিস্কার প্রথাও রয়েছে। তাতে কি এমন লাভ হয়েছে আমজনতার ?
পেশাগত কারণে আমি সেই বাম আমল থেকেই বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতাকে চিনি যারা খুউব অল্পদিনেই দৃষ্টিকটু ভাবে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। তাদের কেউ বহিস্কৃত হয়েছেন। আবার কাউকে বহিস্কারের সুযোগ পর্যন্ত পায় নি দল। ভালো রকম গুছিয়ে নিয়ে তারাই দলকে ' টা-টা ' করে চলে গিয়েছেন অন্যদলে। কিম্বা বাড়িতে মোচ্ছব লাগিয়ে রবীনহুড সাজার চেষ্টা করেছেন। এমন নজির ভুরি ভুরি আছে। কিন্তু দুনীতির দায়ে অভিযুক্ত কোন নেতার আয়ের উৎসের সংগে সংগতিহীন সম্পত্তি বাজেযাপ্ত করে জনকল্যাণে লাগানো হয়েছে এমনটা জানা নেই। আসলে যখন গত্যন্তর থাকে না তখনই দু' একজনকে বহিষ্কার করে মুখ রক্ষার চেষ্টা হয়। ভাবের ঘরে এ চুরি চলছে নিরন্তর। আমরা ভেবে করব কি ?
আবার হতাশও হতে হয়। বহিস্কৃত হওয়ার পর ওই নেতা সংবাদ মাধ্যমে কার্যত হাটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছেন। শুধু হাটে হাড়িই ভাঙে নি , পরোক্ষে দল এবং প্রশাসনকে খাদের কিনারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন তিনি। সংবাদ মাধম্যে কি বলেছেন ওই নেতা ? দলের অন্য এক নেতার মেয়ের চাকরির সুপারিশের প্রেক্ষিতে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন," আমি তো বলেইছি টাকা ছাড়া চাকরি হবে না। তবে দলের নেতার মেয়ে তাই টাকাটা কম নিতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না বহিস্কৃত ওই নেতার স্বীকারোক্তি শাসকদল এবং প্রসাশনকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
জনমানসে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে , তাহলে চাকরির জন্য কাকে টাকা লাগে? নেতাদের ছেলে-মেয়ের জন্য চাকরির জন্য সুপারিশও চলে? এক্ষেত্রে অবশ্য একটি সরলীকরণ তত্ত্ব শাসকদল এবং প্রশাসকের মনে সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে। নিজে অভিযুক্ত হওয়ার পর অনেকেই তো অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন -- এই তত্ত্ব শাসক এবং প্রশাসককে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। কিন্তু আমজনতার প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, সোস্যাল মিডিয়ায় কৌতুক নক্সা করে যেখানে জেলে যাওয়ার নজির রয়েছে সেখানে কেন সংবাদ মাধ্যমে শাসক এবং প্রশাসকের মুখে একরাশ চুনকালি মাখিয়ে পার পেয়ে যাবেন একজন বহিস্কৃত নেতা ?
কেন তাকে গ্রেফতারের পর জেরা করে চাকরির নামে টাকা নেওয়ার সেই মুল পান্ডাটির হদিশ জানার চেষ্টা করা হবে না? এ প্রশ্নের জবাব শোষক কিম্বা প্রশাসকের কাছে মেলে না। তাই আমজনতার সংশয় , কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোবে না তো ? দুনীতি - স্বজনপোষণ নতুন কোন ঘটনা নয়। ছিল, আছে হয়তো থাকবেও। রাজা -- বাদশাহের আমল থেকে বহিস্কার প্রথাও রয়েছে। তাতে কি এমন লাভ হয়েছে আমজনতার ?
পেশাগত কারণে আমি সেই বাম আমল থেকেই বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতাকে চিনি যারা খুউব অল্পদিনেই দৃষ্টিকটু ভাবে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। তাদের কেউ বহিস্কৃত হয়েছেন। আবার কাউকে বহিস্কারের সুযোগ পর্যন্ত পায় নি দল। ভালো রকম গুছিয়ে নিয়ে তারাই দলকে ' টা-টা ' করে চলে গিয়েছেন অন্যদলে। কিম্বা বাড়িতে মোচ্ছব লাগিয়ে রবীনহুড সাজার চেষ্টা করেছেন। এমন নজির ভুরি ভুরি আছে। কিন্তু দুনীতির দায়ে অভিযুক্ত কোন নেতার আয়ের উৎসের সংগে সংগতিহীন সম্পত্তি বাজেযাপ্ত করে জনকল্যাণে লাগানো হয়েছে এমনটা জানা নেই। আসলে যখন গত্যন্তর থাকে না তখনই দু' একজনকে বহিষ্কার করে মুখ রক্ষার চেষ্টা হয়। ভাবের ঘরে এ চুরি চলছে নিরন্তর। আমরা ভেবে করব কি ?
-----০----
কেন এ প্রহসন ?
এ প্রহসনের কি দরকার ছিল ? রবিবার নলহাটি পুরসভার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দিনভর ভোটাদের এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল শুধু সংবাদ মাধ্যমকে। কারণ সংবাদ মাধ্যম ছাড়া তাদের এ প্রশ্ন শোনার কার্যত কেউ ছিল না। পুলিশ- প্রশাসনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে বসিয়ে রেখে কি ভাবে ভোট করে নিতে হয় তা দেখিয়ে দিল শাসকদল। দুপুর তখন সাড়ে ১২ টা। শুরু হয়েছে মুসলধারে বৃষ্টি। আচমকা একদল যুবক পুলিশ প্রশাসনের সামনে দিয়েই জামার কলার উঁচু করে ঢুকে গেল ১২ নং ওয়ার্ডের নলহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১২ / ২৬ নং বুথে। লাইনে দাঁড়ানো বৈধ ভোটারদের হঠিয়ে দিয়ে তারা একতরফা ছাপ্পা মারতে শুরু করে দিল। বিরোধীদলের প্রার্থীরা পুলিশ -প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেন।
কেউ ভ্রুক্ষেপও করলেন না। তখন সংবাদ মাধ্যমকে মাঠে নামতে হলো । ছবি তোলা, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই রে রে করে তেড়ে এল ওরা। ঝাঁপিয়ে পড়ল আমাদের উপর। আমাদের তিন সহকর্মী প্রহৃত হলেন। এক চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হল। তখনও সংবাদ মাধ্যম তাদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। কিন্তু যেখানে অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী পুলিশই খেলার পুতুল সেখানে সামান্য একটি পেন আর নোটবুক কিম্বা ক্যামেরা, বুম হাতে সাংবাদিকরা কতক্ষণই বা যুঝবেন তারা? তাই দুষ্কৃতীরা শেষ পর্যন্ত ই, ভি,এম মেসিন বের করে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এক পুলিশ অফিসার তা আটকাতে গিয়ে প্রহৃত হন। সাংবাদিকরা দুস্কৃতিদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন। তখন বেগতিক দেখে ই,ভি,এম ফেলে কয়েকজন চম্পট দেয়।
কয়েকজনকে পুলিশ দোতলার বারন্দায় জামাই আদরে বসিয়ে রাখে। সাংবাদিকরা ফের তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতারের পরিবর্তে পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে সাহার্য্য। সাংবাদিকদের চাপে অবশ্য অন্য দুজনকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। সেখানেই শেষ নয়। দ্বিতীয়বার ফের হানা দেয় ওই বাহিনী। বেলা তখন চারটে কুড়ি। হঠাৎ দেখি পুলিশের কেমন যেন গাছাড়া ভাব। পুলিশের সুপিরিয়র অফিসাররা কখন বুথ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সেই সময় লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রায় ২০০ জন ভোটার। হঠাৎ জনা ২০ যুবক ঢুকে গেলেন বুথের ভিতর। ওইসব যুবকদের মধ্যে পুলিশ যে দুজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারাও রয়েছে। রয়েছে প্রচুর পুলিশ, র্যাফ, প্রশাসনের লোকও। তাস্বত্বেও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটাররা বাড়ির দিকে ছুটছেন। ছেলে কোলে মহিলার ছুটতে গিয়ে আছাড় খাচ্ছেন। আছাড় খাচ্ছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য। ততক্ষণে বুথের দরজা বন্ধ করে এলোপাথাড়ি ছাপ্পা ভোট দিতে শুরু করছে ওরা।
পুলিশের দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে তারা উলটো দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। এমন কি ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশকে ছাপ্পাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পুলিশরা তাকে সাফ জানিয়ে দেন -- সুপিরিয়র অফিসার ছাড়া তারা কিছুই করতে পারবেন না। কিন্তু সুপিরিয়র যে তখন কোথাই তাও তারা জানেন না। বুথ থেকে বেরিয়ে আসার মুখে বহু ভোটারের মুখে শোনা গেল -- এই সবের মানে কি ছিল? বললেই পারতিস ভোট দেওয়া হবে না। তাহলে কাজ কামাই করে আসতাম না। আমাদেরও প্রশ্ন কি দরকার ছিল এ প্রহসনের? নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসনের যদি স্বচ্ছ অবাধ ভোট করানোর ক্ষমতাই না থাকে তাহলে কি প্রয়োজন ছিল অযথা কিছু রক্তক্ষয়, জনগণের করের টাকার এমন শ্রাদ্ধ ?
কয়েকদিন আগেই কলকাতা থেকে কনভয় হাঁকিয়ে লাভপুরের বন্যাপ্লাবিত এলাকাপরিদর্শনে এসেছিলেন এক জনপ্রতিনিধি। তার আগমন ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনের দৌড়াদৌড়ি, সংবাদ মাধ্যমের হুড়োহুড়ি এলাকা সরগরম করে তোলে। জন প্রতিনিধিকে তাদের জল যন্ত্রণার কথা বলার জন্য বন্যা দুর্গতরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন। বহুরূপী দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নদীর স্রোতে তলিয়ে যাওয়া শীতলগ্রামের শতাব্দী বাজিকরের বাড়ির লোক ভেবেছিলেন , গ্রাম ঢোকার নীচু রাস্তাটা উঁচু করার কথা জনপ্রতিনিধিকে বলবেন। প্রতিবার বর্ষায় রাস্তাটা যে তলিয়ে যায়। আর সেই রাস্তায় প্রান হাতে নিয়েই তাদের যাতায়াত করতে হয়। কারণ গ্রামের বাইরে যাওয়ার আর যে বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ঠিবার জলপাড়ার বাসিন্দারা ভেবেছিলেন তারা জনপ্রতিনিধিকে বলবেন , বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকাটা পেতে যেন আগের বারের মতো আর শীত পেরিয়ে না যায়। টাকার অংকটাও যেন কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কারণ বরাদ্দ টাকায় বাড়ি হয়না। দেওয়াল হলে বাড়ির চাল হয়না। কিম্বা চাল হলে দেওয়াল হয় না। তাই ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের হাড়হিম করা শীত ভোগ করতে হয়।
কিন্তু কারও কোন কথাই বলা হয় না। কারণ ওইসব দুর্গতদের সংগে কথা বলার সময়ই হয় না জনপ্রতিনিধির। একটি সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নদীবাধ ভাঙন দেখেই কার্যত দূর্গতদের নাকের ডগার উপর দিয়ে হুস হাস করে পেরিয়ে যায় জনপ্রতিনিধির কনভয়। আর বিষয়ে "থ" হয়ে যান বন্যাক্লিষ্ট মানুষজন। কারণ ডাঙায় চেপে বান দেখা কিম্বা নদীতে বান পড়া দেখার কথা তাদের জানা থাকলেও কলকাতা থেকে তেল পুড়িয়ে এমন মজা দেখতে আসার মানে কিছুতেই তারা খুঁজে পাচ্ছিল না। তারা তো আর জানেন না এর নাম রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। জানেন না জল সরে যাওয়া গ্রামে গাড়িতে চেপে একদিনের ওই বান দেখতে আসায় সরকারি যে টাকা খরচ হয়েছে তা দিয়ে অনায়াসেই নীচু রাস্তাটা উঁচু হয়ে যায় , বাড়ি তৈরির ক্ষতিপূরণটাও কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া যায়। সেসব কিছুই তাদের জানা হয় না। শুধু জনপ্রতিনিধির কনভয়ের কালো ধোঁওয়া তাদের চোখ মুখ ঢেকে দেয়।
------০--------
কেউ ভ্রুক্ষেপও করলেন না। তখন সংবাদ মাধ্যমকে মাঠে নামতে হলো । ছবি তোলা, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই রে রে করে তেড়ে এল ওরা। ঝাঁপিয়ে পড়ল আমাদের উপর। আমাদের তিন সহকর্মী প্রহৃত হলেন। এক চিত্র সাংবাদিকের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হল। তখনও সংবাদ মাধ্যম তাদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। কিন্তু যেখানে অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী পুলিশই খেলার পুতুল সেখানে সামান্য একটি পেন আর নোটবুক কিম্বা ক্যামেরা, বুম হাতে সাংবাদিকরা কতক্ষণই বা যুঝবেন তারা? তাই দুষ্কৃতীরা শেষ পর্যন্ত ই, ভি,এম মেসিন বের করে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এক পুলিশ অফিসার তা আটকাতে গিয়ে প্রহৃত হন। সাংবাদিকরা দুস্কৃতিদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন। তখন বেগতিক দেখে ই,ভি,এম ফেলে কয়েকজন চম্পট দেয়।
কয়েকজনকে পুলিশ দোতলার বারন্দায় জামাই আদরে বসিয়ে রাখে। সাংবাদিকরা ফের তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতারের পরিবর্তে পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে সাহার্য্য। সাংবাদিকদের চাপে অবশ্য অন্য দুজনকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। সেখানেই শেষ নয়। দ্বিতীয়বার ফের হানা দেয় ওই বাহিনী। বেলা তখন চারটে কুড়ি। হঠাৎ দেখি পুলিশের কেমন যেন গাছাড়া ভাব। পুলিশের সুপিরিয়র অফিসাররা কখন বুথ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সেই সময় লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রায় ২০০ জন ভোটার। হঠাৎ জনা ২০ যুবক ঢুকে গেলেন বুথের ভিতর। ওইসব যুবকদের মধ্যে পুলিশ যে দুজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারাও রয়েছে। রয়েছে প্রচুর পুলিশ, র্যাফ, প্রশাসনের লোকও। তাস্বত্বেও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটাররা বাড়ির দিকে ছুটছেন। ছেলে কোলে মহিলার ছুটতে গিয়ে আছাড় খাচ্ছেন। আছাড় খাচ্ছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য। ততক্ষণে বুথের দরজা বন্ধ করে এলোপাথাড়ি ছাপ্পা ভোট দিতে শুরু করছে ওরা।
পুলিশের দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে তারা উলটো দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। এমন কি ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশকে ছাপ্পাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পুলিশরা তাকে সাফ জানিয়ে দেন -- সুপিরিয়র অফিসার ছাড়া তারা কিছুই করতে পারবেন না। কিন্তু সুপিরিয়র যে তখন কোথাই তাও তারা জানেন না। বুথ থেকে বেরিয়ে আসার মুখে বহু ভোটারের মুখে শোনা গেল -- এই সবের মানে কি ছিল? বললেই পারতিস ভোট দেওয়া হবে না। তাহলে কাজ কামাই করে আসতাম না। আমাদেরও প্রশ্ন কি দরকার ছিল এ প্রহসনের? নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসনের যদি স্বচ্ছ অবাধ ভোট করানোর ক্ষমতাই না থাকে তাহলে কি প্রয়োজন ছিল অযথা কিছু রক্তক্ষয়, জনগণের করের টাকার এমন শ্রাদ্ধ ?
----০---
ব্যবস্থা গ্রহণ
'খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব '। পেশাগত তাগিদে অধস্তনদের কোন দুনীতি কিন্বা বেনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে উর্ধত্বনের "কোট" নিতে গিয়ে এই ধরণের পাশ কাটানো কত প্রতিক্রিয়া যে শুনেছি তার হিসাব নেই। খতিয়ে দেখে কোথাও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তাও জানা নেই। তাই ওই জাতীয় প্রতিক্রিয়া শুনলেই খুব হাসি পায়। ফের আরও একবার হাসতে হলো শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথা শুনে। নানুরের কুমিড়া--সাওতা বালিকা বিদ্যালয় প্রসঙ্গে ঠিক একই রকম কথা বললেন ওই কর্তা। কিন্তু ব্যবস্থাটা যে কার বিরুদ্ধে হওয়া উচিত তা নিয়ে যথেষ্ট ধন্ধ রয়েছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত স্কুলটি ছিল জুনিয়ার। সেই সময় স্কুলের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬ জন শিক্ষক / শিক্ষিকা। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে স্কুলে রয়েছেন মাত্র ৩ জন শিক্ষিকা। তারাই কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে স্কুল চালাচ্ছিলেন। ওই অবস্থায় ২০১৪ সালে স্কুলটিকে হাইস্কুলের অনুমোদন দেওয়া হয়।
শিক্ষা দফতরেরই নিয়মানুযায়ী একটি হাইস্কুলে নুন্যতম ১২ জন শিক্ষক অথবা শিক্ষিকা থাকার কথা। শিক্ষার অধিকার আইনেও প্রতি ৪০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ১ জন করে শিক্ষক / শিক্ষিকা নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। ওই স্কুলে বর্তমানে ছাত্রী রয়েছে ২১৫ জন। কিন্তু আজও ওই স্কুলে কোন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। এর ফলে ওই স্কুলে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। কারণ ২০১৬ সালের জুন মাস থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। একই কারণে ১৭ অগষ্ট থেকে ছুটি নিয়েছেন আর এক শিক্ষিকা। আর ১৮ অগষ্ট স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদককে ফোন করে শেষের জন জানিয়ে দিয়েছেন অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন না। এমনটা তো হতেই পারে। কিন্তু স্কুল তো আর বন্ধ থাকতে পারে না। করণিক স্কুল খুলে রোল কল করছেন। আর উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরা নিচু ক্লাসের ছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষাদফতরের কর্তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান , এভাবে এক সংগে ছুটি নেওয়াটা নিয়ম বিরুদ্ধ। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিক্রিয়া শুনে হাসি পেলেও মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন উঁকি দিয়ে গেল। কে কার ব্যবস্থা নেয় ? সময় মতো শিক্ষক নিয়োগ না করায় সর্বাগ্রে তো নিয়ম ভঙ্গ-এর অভিযোগে শিক্ষাদফতরের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শিক্ষার অধিকার আইনও তো মানা হয়নি। একবারও ভেবে দেখা হয়নি শিক্ষিকারা তো দশভুজা নন , তিনজনে প্রশাসনিক সংযোগ রক্ষা, মিড ডে মিল, ভোটার লিষ্ট সহ সরকারের বারো সতেরো কাজের পর কোন যাদুবলে একই সংগে ৬ টি ইউনিট সামাল দেবেন। তাহলে শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে কে ব্যবস্থা নেবে? আসলে ওই জাতীয় প্রতিক্রিয়ার কোন সারবত্তাই নেই। ভাবের ঘরে চুরি ছাড়া কিছুই নয়। তাই আজকাল অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম আর প্রশাসনিক আধিকারিকদের সংগে কথা না বলেই তাদের মুখে ওই জাতীয় বক্তব্য বসিয়ে দেয়। কারণ সবাই জেনে গিয়েছে , ওই জাতীয় প্রতিক্রিয়াই মিলবে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরাও কোন আপত্তি জানান না। কারণ এর মতো সবদিক রক্ষার নিরাপদ প্রতিক্রিয়া তো আর হয় না। তাহলে কি কিছুই ব্যবস্থা হয় না? হয় বইকি। সামান্য চাল কিম্বা ডাল চুরির অভিযোগে কোন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে বদলি কিম্বা বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে বইকি। কিন্তু কে করেন বরখাস্ত ?
বরখাস্ত করেন ওই অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রেরই ঘর নির্মাণে নিযুক্ত ঠিকাদারের কাছে মোটা টাকা পার্সেন্টেজ খাওয়া মোটা মাইনের বি,ডি,ও কিম্বা সি,ডি,পি'ও। কে ওইসব পেটমোটা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? বাড়িতে অভাবের হাজারো হা মুখের চাহিদা মেটাতে চাল-ডাল চুরির দায়ে বরখাস্ত হওয়া নুন্যতম বেতনের ওই অংগনওয়ারী কর্মীর শ্রম শোষণকারীর বিরুদ্ধে কে নেবে ব্যবস্থা ? চুক্তির জুজু দেখিয়ে যারা ওইসব অস্থায়ী কর্মীদের সরকার নির্ধারিত নুন্যতম মজুরীটুকুও দেয় না তাদের বিরুদ্ধে কে নেবে ব্যবস্থা ? ব্যবস্থা আরও কিছু ক্ষেত্রে হয় বইকি। ময়ূরেশ্বরের কোনও আম্বুলেন্স পরিষেবাহীন গ্রাম থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতাল অভিমুখে ছুটে যাওয়া প্রাইভেট গাড়ির চালকের অথারাইজ লেটার অভাবে জরিমানা কিম্বা ঘুষ আদায়ের তৎপড়তার অভাব পুলিশের হয় না।
অথচ ময়ূরেশ্বরের রাস্তাতেই বালি বোঝাই ডাম্পার আটকে সেই পুলিশকেই হাত গুটিয়ে নিতে দেখি চালকের দরজার পাশে এলাকার শাসক দলের এক জেলাস্তরের নেতার ফোন নং সহ লেখা নাম দেখে। ওটাই এখন পুলিশের কাছে পাসকোড হয়ে গিয়েছে। ওই পাসকোড ভাঙিয়েই নেতার ৬ খানা ভিজে বালি বোঝাই ওভারলোড ডাম্পার ,চারটে ট্রাক্টর , দুটো পকল্যাণ্ড গাড়ি দিনরাত আমাদের করের টাকায় তৈরি রাস্তার বারোটা বাজিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোন বেনিয়মকে ছোট করে দেখা কিন্বা চুরিকে সমর্থনও নয় , বলার কথা একটাই নিছক চুনোপুঁটিদেরই নয় , রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক । কিন্তু কে নেবে ব্যবস্থা ? ব্যবস্থা নেওয়ার সর্মময় কর্তাকর্ত্রীদের সংগেই যে ওই বালি নেতার একাসন। চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে আমরা ভেবে করব কি?
------০-----
প্রশ্ন
বেসরকারি স্কুলে ধর্মগ্রন্থ পড়ানো আর বরদাস্ত করা হবে না। খুব ভালো পদক্ষেপ।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মাচারণ মেনেও নেওয়া যায় না। মোটেই কাম্যও নয়। কিন্তু প্রশ্ন জাগে সবক্ষেত্রে এই উদ্যোগের বাস্তবায়ণ আদৌ সম্ভব হবে কি ? কারণ এ রাজ্য তথা এদেশে ধর্মান্তকরণের শর্তে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খাওয়া পড়া এবং শিক্ষা দেওয়া হয়। ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ধর্মীয় স্তোত্রপাঠের মাধ্যমে প্রার্থনাও চালু আছে।
ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কি হবে ? ওইসব প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে গেলে হই হই পড়ে যাবে দেশ জুড়ে। তাহলে সেফ্র বিশেষ কিছু তথাকথিত ধর্মীয় গ্রন্থ এত চক্ষুশুল হয়ে পড়ল কি কারণে ? বিশেষত ওইসব গ্রন্থকে নিছক ধর্মীয় গ্রন্থের গন্ডীতে বেঁধে রাখাও যায় না। ছোটবেলায় দাদু-ঠাকুরমায়ের মুখে শুনে শুনে আমাদের মনের মধ্যে ওই গ্রন্থের কাহিনী অন্যায়কে পরাস্ত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার ছবি হিসাবে চিত্রিত হয়ে রয়েছে।
যদি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সাফল্যের ইতিহাস পাঠ্যসুচির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তাহলে অধর্মকে পরাস্ত করে ধর্মের জয়ের পৌরানিক কাহিনী ব্রাত্য হয় কি করে ? তার চেয়ে বিশেষ কোন একটি ধর্মের পরিবর্তে সব ধর্মের প্রার্থনা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করার কথা ভাবা হোক দেখি। সেক্ষেত্রে সর্বধর্ম সমন্বয়ের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পথ প্রশস্থ হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। পথ প্রদর্শক হিসাবে অবশ্যই সরকারি কিম্বা সরকার পোষিত স্কুলগুলিতেই তা চালু করে দেখিয়ে দিতে হবে। সেই ঝুঁকি নেওয়া কি সরকারে আদৌ সম্ভব ?
----০----
পড়ে পাওয়া চৌদ্দআনা
রাত্রি তখন পৌনে এগারোটা। খাওয়া-দাওয়া করে শোওয়ার আয়োজন করছি , হঠাৎ কানে এলো পাড়ার লোকেদের সমেবেত উল্লাস -- এসেছে, এসেছে। অভ্যাস বশে সিলিংয়ের দিকে চেয়ে দেখি ফ্যানটা ঘুরতে শুরু করেছে। পরিবারের লোকেরাও স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়েন -- যাক বাবা সেই দুপুরে গিয়ে শেষ পর্যন্ত এলো তাহলে। এ অঞ্চলে এটাই দস্তুর।একপশলা বৃষ্টি হলেই ঘন্টার পর ঘন্টা উধাও হয়ে যায় বিদ্যুৎ। যখন পৌঁছোয় তখন মেয়ে-বৌদের গৃহস্থালির কাজ, টিভিতে সিরিয়াল দেখা , ছেলে - মেয়েদের পড়াশোনা সব শেষ। কেবল ঘুমানোর সুযোগটুকু মেলে। কিন্তু সেই স্বস্তিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়না।ফের বৃষ্টি নামে, আর উধাও হয়ে যায় বিদ্যুৎ।পরদিন ফেরে সেই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সময় পার করে। একদিন--দুদিন নয়, এ রোজনামচা চলছে বছরের পর বছর। শুধু আমাদের গ্রাম লোকপাড়াই নয়, ময়ূরেশ্বরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজনের কাছে এখন বিদ্যুৎ হয়ে উঠেছে যেন একটা পড়ে পাওনার বিষয়। পয়সা দিয়ে কিনতে হয় না , যেন দয়ার দান। অথচ ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে পাশের গ্রাম কুলিয়াড়া সহ সনকপুর ফিডারের আওতাধীন বহুগ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা অধিকতর অনেক ভাল। ভালো ষাটপলশা ফিডারের পরিষেবাও।
কিন্তু কোটাসুরের একই সাবস্টেশনের অধনীস্থ বাসুদেবপুর ফিডারের আওতাভুক্ত লোকপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকার পরিষেবা চরম অবহেলিত। কোটাসুর সাবস্টেশন থেকে লোকপাড়ার দুরত্ব প্রায় ১৫ কিমি। ধারাবাহিকভাবে এহেন বেহাল বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে যা খবর প্রকাশিত হয়েছে সেইসব সংবাদের অক্ষরগুলো পরপর সাজালে তা কোটাসুরে পৌঁছে যাবে। কিন্তু বিদ্যুতের বেহালদশা আজ ঘোচেনি। তাই ব্রীতশ্রদ্ধ হয়ে শাসকদলের এক যুবনেতা বললাম, তোরা রয়েছিস, অথচ এলাকার লোক অন্ধকারে রয়েছে। একটু দেখতে পারিস না ? একটুও না ভেবে নেতা বললেন ওইসব বিষয় নিয়ে আমাদের কিছু বলা যাবে না। দলের ক্ষতি হবে। বুঝলাম মানুষের ক্ষতি নয়, দলের ক্ষতিটাই মুখ্য শাসকের কাছে। নাহলে এলাকায় পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তরের একাধিক নেতা, জনপ্রতিনিধি থাকা স্বত্ব্বেও এমন হাল হয় ?
তবুও ধরলাম পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলাস্তরের দুই জনপ্রতিনিধিকে। বললাম, বিদ্যুতের এই হাল, তোমরা তো একটু বলতে পারো। তারা বললেন , বলি তো কিন্তু কোনকাজ হয় না। হায়, কোথায় বাস করছি আমরা? জনপ্রতিনিধিরা যদি এই কথা বলেন, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ দাঁড়ায় কোথাই? প্রশ্ন জাগে কেন আমাদের মেনে নিতে হবে এই ব্যবস্থা ? অনিবার্য কোন কারণে নির্ধারিত নিধারিত দিনে বিল দিতে না পারলে আমারা ফাইন দিই। বিদ্যুৎ সরবরাহ থাক বা নাই থাক আমাদের নুন্যতম বিল মিটার ভাড়া সহ বেশ কিছু খরচ কিন্তু বিদ্যুৎ দফতরকে দিতেই হয়। তাহলে বিদ্যুৎ দফতরই বা কেন পরিষেবা দিতে না পারার জন্য ফাইন দেবে না ? এত বেহাল অবস্থা তো ছিল না।একসময় পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে কলসেন্টার ছিল। সেখানে খবর দিলে পৌঁছে যেত বিদ্যুৎ পর্ষদের গাড়ি। আর এখন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকলে সাবস্টেশনের ফোনই কেউ ধরেন না।
যদিও বা ভুল করে কেউ ধরে ফেলেন তাহলে তিনি দেখিয়ে দেন বর্ধমান অফিস।আর বর্ধমান অফিসের ফোনের সংযোগ পেতে পেতে অভিযোগ জানানোর ধৈর্যটা অধিকাংশই হারিয়ে ফেলেন। কেন এই বেহাল দশা ? বিদ্যুৎ দফতরেরই অভ্যন্তরে শোনা গিয়েছে নানা মুনির নানা মত। একাংশের মতে, আদ্যিকালের সেই পরিকাঠামো দিয়েই চলছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এরফলে ঘন ঘন ব্যাহত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা। যখন আবহাওয়া ভালো থাকে তখন পুরোপুরি সংস্কারের কোন উদ্যোগই নেওয়া হয় না। কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেওয়া হয় মাত্র। আর তার ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে। অন্য অংশের মতে, রাশটাই পুরোপুরি আলগা হয়ে পড়েছে। সাবস্টেশন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের সংগে যুক্ত ঠিকাদারেরা শাসক দলে ভিড়েছেন, নয়তো নানা কারণে শাসকদলের নেতাদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছেন। একই অবস্থা আধিকারিকদেরও। তাই মেনে এবং মানিয়ে নেওয়ার বিদ্যুৎ পরিষেবায় ক্রমেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি আমরা।
কিন্তু কোটাসুরের একই সাবস্টেশনের অধনীস্থ বাসুদেবপুর ফিডারের আওতাভুক্ত লোকপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকার পরিষেবা চরম অবহেলিত। কোটাসুর সাবস্টেশন থেকে লোকপাড়ার দুরত্ব প্রায় ১৫ কিমি। ধারাবাহিকভাবে এহেন বেহাল বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে যা খবর প্রকাশিত হয়েছে সেইসব সংবাদের অক্ষরগুলো পরপর সাজালে তা কোটাসুরে পৌঁছে যাবে। কিন্তু বিদ্যুতের বেহালদশা আজ ঘোচেনি। তাই ব্রীতশ্রদ্ধ হয়ে শাসকদলের এক যুবনেতা বললাম, তোরা রয়েছিস, অথচ এলাকার লোক অন্ধকারে রয়েছে। একটু দেখতে পারিস না ? একটুও না ভেবে নেতা বললেন ওইসব বিষয় নিয়ে আমাদের কিছু বলা যাবে না। দলের ক্ষতি হবে। বুঝলাম মানুষের ক্ষতি নয়, দলের ক্ষতিটাই মুখ্য শাসকের কাছে। নাহলে এলাকায় পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তরের একাধিক নেতা, জনপ্রতিনিধি থাকা স্বত্ব্বেও এমন হাল হয় ?
তবুও ধরলাম পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলাস্তরের দুই জনপ্রতিনিধিকে। বললাম, বিদ্যুতের এই হাল, তোমরা তো একটু বলতে পারো। তারা বললেন , বলি তো কিন্তু কোনকাজ হয় না। হায়, কোথায় বাস করছি আমরা? জনপ্রতিনিধিরা যদি এই কথা বলেন, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ দাঁড়ায় কোথাই? প্রশ্ন জাগে কেন আমাদের মেনে নিতে হবে এই ব্যবস্থা ? অনিবার্য কোন কারণে নির্ধারিত নিধারিত দিনে বিল দিতে না পারলে আমারা ফাইন দিই। বিদ্যুৎ সরবরাহ থাক বা নাই থাক আমাদের নুন্যতম বিল মিটার ভাড়া সহ বেশ কিছু খরচ কিন্তু বিদ্যুৎ দফতরকে দিতেই হয়। তাহলে বিদ্যুৎ দফতরই বা কেন পরিষেবা দিতে না পারার জন্য ফাইন দেবে না ? এত বেহাল অবস্থা তো ছিল না।একসময় পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে কলসেন্টার ছিল। সেখানে খবর দিলে পৌঁছে যেত বিদ্যুৎ পর্ষদের গাড়ি। আর এখন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকলে সাবস্টেশনের ফোনই কেউ ধরেন না।
যদিও বা ভুল করে কেউ ধরে ফেলেন তাহলে তিনি দেখিয়ে দেন বর্ধমান অফিস।আর বর্ধমান অফিসের ফোনের সংযোগ পেতে পেতে অভিযোগ জানানোর ধৈর্যটা অধিকাংশই হারিয়ে ফেলেন। কেন এই বেহাল দশা ? বিদ্যুৎ দফতরেরই অভ্যন্তরে শোনা গিয়েছে নানা মুনির নানা মত। একাংশের মতে, আদ্যিকালের সেই পরিকাঠামো দিয়েই চলছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এরফলে ঘন ঘন ব্যাহত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা। যখন আবহাওয়া ভালো থাকে তখন পুরোপুরি সংস্কারের কোন উদ্যোগই নেওয়া হয় না। কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেওয়া হয় মাত্র। আর তার ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে। অন্য অংশের মতে, রাশটাই পুরোপুরি আলগা হয়ে পড়েছে। সাবস্টেশন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের সংগে যুক্ত ঠিকাদারেরা শাসক দলে ভিড়েছেন, নয়তো নানা কারণে শাসকদলের নেতাদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছেন। একই অবস্থা আধিকারিকদেরও। তাই মেনে এবং মানিয়ে নেওয়ার বিদ্যুৎ পরিষেবায় ক্রমেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি আমরা।
-----0----
বান দেখা
বান দেখা বলে গ্রাম বাংলায় একটা কথা প্রচলিত আছে। দল বেঁধে নদীতে বান পড়া দেখতে যাওয়া , ডাঙায় চেপে বান দেখার বিষয়টি শোনা ছিল সম্প্রতি জনপ্রতিনিধিদের বান দেখা সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা হলো।
কয়েকদিন আগেই কলকাতা থেকে কনভয় হাঁকিয়ে লাভপুরের বন্যাপ্লাবিত এলাকাপরিদর্শনে এসেছিলেন এক জনপ্রতিনিধি। তার আগমন ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনের দৌড়াদৌড়ি, সংবাদ মাধ্যমের হুড়োহুড়ি এলাকা সরগরম করে তোলে। জন প্রতিনিধিকে তাদের জল যন্ত্রণার কথা বলার জন্য বন্যা দুর্গতরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন। বহুরূপী দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নদীর স্রোতে তলিয়ে যাওয়া শীতলগ্রামের শতাব্দী বাজিকরের বাড়ির লোক ভেবেছিলেন , গ্রাম ঢোকার নীচু রাস্তাটা উঁচু করার কথা জনপ্রতিনিধিকে বলবেন। প্রতিবার বর্ষায় রাস্তাটা যে তলিয়ে যায়। আর সেই রাস্তায় প্রান হাতে নিয়েই তাদের যাতায়াত করতে হয়। কারণ গ্রামের বাইরে যাওয়ার আর যে বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ঠিবার জলপাড়ার বাসিন্দারা ভেবেছিলেন তারা জনপ্রতিনিধিকে বলবেন , বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকাটা পেতে যেন আগের বারের মতো আর শীত পেরিয়ে না যায়। টাকার অংকটাও যেন কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কারণ বরাদ্দ টাকায় বাড়ি হয়না। দেওয়াল হলে বাড়ির চাল হয়না। কিম্বা চাল হলে দেওয়াল হয় না। তাই ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের হাড়হিম করা শীত ভোগ করতে হয়।
কিন্তু কারও কোন কথাই বলা হয় না। কারণ ওইসব দুর্গতদের সংগে কথা বলার সময়ই হয় না জনপ্রতিনিধির। একটি সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নদীবাধ ভাঙন দেখেই কার্যত দূর্গতদের নাকের ডগার উপর দিয়ে হুস হাস করে পেরিয়ে যায় জনপ্রতিনিধির কনভয়। আর বিষয়ে "থ" হয়ে যান বন্যাক্লিষ্ট মানুষজন। কারণ ডাঙায় চেপে বান দেখা কিম্বা নদীতে বান পড়া দেখার কথা তাদের জানা থাকলেও কলকাতা থেকে তেল পুড়িয়ে এমন মজা দেখতে আসার মানে কিছুতেই তারা খুঁজে পাচ্ছিল না। তারা তো আর জানেন না এর নাম রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। জানেন না জল সরে যাওয়া গ্রামে গাড়িতে চেপে একদিনের ওই বান দেখতে আসায় সরকারি যে টাকা খরচ হয়েছে তা দিয়ে অনায়াসেই নীচু রাস্তাটা উঁচু হয়ে যায় , বাড়ি তৈরির ক্ষতিপূরণটাও কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া যায়। সেসব কিছুই তাদের জানা হয় না। শুধু জনপ্রতিনিধির কনভয়ের কালো ধোঁওয়া তাদের চোখ মুখ ঢেকে দেয়।
------০--------
eder uchit siksha deya uchhit.
ReplyDelete