Short story, Features story,Novel,Poems,Pictures and social activities in Bengali language presented by Arghya Ghosh

কীর্তি যস্য -- ১৪ ( পলাশ )






                                                                           
                                                                     

          


                                             

         লাভপুরকে অন্যভাবে  চিনিয়েছেন                               পরিচালক পলাশ



                                                               


                      
                              অর্ঘ্য ঘোষ 






জ্যাঠামশাই চিনিয়েছিলেন লেখায়। তিনি লাভপুরকে চিনিয়েছেন চলচিত্রে। তিনি চিত্র পরিচালক পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার মুকুন্দপুরের বাসিন্দা হলেও পলাশবাবু আদতে লাভপুরের ভূমিপুত্র।বাবা প্রয়াত পার্বতীশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। মা বিমলাদেবী ছিলেন গৃহবধু। কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বড় জ্যাঠামশাই। ১৯৩৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পলাশবাবুর জন্ম।সাত ভাইবোনের মেজ পলাশবাবু লাভপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক এবং যাদবলাল হাইস্কুল থেকে স্কুল ফাইন্যাল পাশের পর ভর্তি হন কলকাতার মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজে। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর সিটি কলেজে থেকে বি .কম পাশ  করেন তিনি। কলেজে পড়া সময় থেকে তার মনের মধ্যে ছবি তৈরির নেশা জাগে।পরিচালক তপন সিংহের কাছেই তার ছবি তৈরির হাতে খড়ি। 

                

                          ১৯৬১ সালে চিত্র পরিচালক তপন সিংহ তারাশঙ্করের কাহিনী হাঁসুলি বাঁকের উপকথা অবলম্বনে ছবি তৈরির উদ্যোগ নেন। ওই ছবিতে লাভপুর তথা বীরভূমের কিছু গ্রাম দৃশ্য তথা জনজীবন চিত্রায়িত করার প্রয়োজন দেখা দেয়। সেই জন্য গাইড হিসাবে তপনবাবুর ইউনিটের সঙ্গে আসতে হয় পলাশবাবুকে। কাছে থেকে ওইসব কাজ দেখতে গিয়ে ছায়ালোকের মায়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই টানেই পরের বছর তপনবাবুর ‘ নির্জন সৌকতে ’ ছবিতে তৃতীয় সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন। তপনবাবুর স্ত্রী অরুন্ধতীদেবী এবং বলাই সেনের সহকারি হিসাবেও কাজ করেছেন পলাশবাবু। পাশাপাশি নিজেও স্বাধীনভাবে পরিচালনা করছেন এক ডজন ছবি। সব মিলিয়ে তার পরিচালিত ছবির সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশটি। ‘ নির্জন সৈকতে ’ , ‘ গল্প হলেও সত্যি’ , ‘ অতিথি ’ , ‘ হাটে বাজারে ’, ‘ ছুটি ’ প্রভৃতি সহকারি হিসাবে  পরিচালিত তার অন্যতম ছবি। স্বাধীনভাবে পরিচালিত ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে ‘কাকপণ্ডিত’ , ‘ রাজাসাহেব ’, ‘ প্রতিমা ’ ‘নবদিগন্ত’ , ‘ অগ্রদানী ’ , ‘ বিজয়িনী ’ , ‘ শতরূপা ’ প্রভৃতি। তার পরিচালিত অধিকাংশ ছবি তারাশঙ্করের কাহিনী অবলম্ভনে চিত্রায়িত। 



                        ওইসব ছবিতে লাভপুর তথা বীরভূমের গ্রাম-জনজীবন প্রাধান্য পেয়েছে। সহকারি কিম্বা স্বাধীন ভাবে তার পরিচালিত কিম্বা প্রযোজিত ছবিতে অভিনয় করেছেন অশোককুমার , দিলীপকুমার , অমিতাভ বচ্চন , ধর্মেন্দ্র , শাবানা আজমী , সায়রাবানু , উত্তমকুমার , সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় , অপর্ণা সেন , ছায়াদেবী , প্রসেঞ্জিত প্রমুখ প্রথিতযশা শিল্পীরা। আর.ডি .বর্মণ , বাপী লাহিড়ী , হেমন্ত মুখোপাধ্যায় , সুধীন দাসগুপ্ত , কালীপদ সেন , লতা মঙ্গেশকর , আশা ভোঁসলে , মান্না দে ,  আরতি মুখোপাধ্যায়দের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। 




                                  সিনেমার পাশাপাশি নাটকেও ছিল তার সমান নেশা। নাট্য ব্যক্তিত্ব অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে নাটকের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। নিজে অভিনয় না করলেও ‘নান্দিকার ’ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই জড়িত ছিলেন। বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত , অশোক মুখোপাধ্যায় , চিন্ময় রায় প্রমুখ নাট্য ব্যক্তিত্বরা একাধিকবার পলাশবাবুর লাভপুরের বাড়িতে পা রেখেছেন। বর্তমানে বিভিন্ন সমাজ কর্মের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন অকৃতদার পলাশবাবু। দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ডাক্তারি কিম্বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সাহার্যার্থে ১৯৯৬ সালে গঠিত কামদাকিঙ্কর মেমোরিয়াল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পলাশবাবু। এ পর্যন্ত ওই সংস্থার সহযোগিতায় বহু দুঃস্থ ছেলেমেয়ে ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। জেলার মাধ্যমিক , উচ্চ মাধ্যমিক পাশ মেধাবী ছাত্রছাত্রী , লোকশিল্পীদের তুলে ধরার উদ্দেশ্যে গঠিত ‘বীরভূমি’ সংস্থারও তিনি সভাপতি। মুকুন্দপুরে দুঃস্থ পরিবারের প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের মানোন্নয়নের উদ্দ্যেশ্যে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাসাগর ফ্রি কোচিং সেন্টারেও সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। 



                           
                             
                         পাশাপাশি প্রচলিত পারিবারিক পুজো এবং অনুষ্ঠানগুলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে দেবোত্তর ট্রাস্ট তৈরি করেছেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজেদের জমিদারি এলাকা ময়ূরেশ্বরের বেলেড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে তারাশঙ্কর নামকরণ এবং ২০০১ সালে লাভপুরে বাবা পার্বতীশঙ্করের নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করেন। বর্তমানে বাবার নামে একটি রাস্তার নামকরণ এবং তারাশঙ্করের বাস্তুভিটের সংস্কারের দাবিতে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।


                       ----০----





                                                 

                                                       



     নজর রাখুন / সঙ্গে থাকুন 


শীঘ্রই দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে আমার তৃতীয় উপন্যাস ------
  
                                  


                    


অর্পিতা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে সালিশির রায়ে সর্বস্ব হারানো এক আদিবাসী তরুণীর কথা ও কাহিনী---  







দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে -----







                   ----০---

No comments:

Post a Comment