( কিস্তি - ৫৭ )
বর নিয়ে বরযাত্রীরা বেরিয়ে যেতেই হাত জোড় করে কপালে ঠেকান সাধনা।কিছুক্ষণের মধ্যে মেয়ের বাড়ি পৌঁছে যায় বর আর বরযাত্রীর দল। অতসী মিষ্টিমুখ করিয়ে জামাই বরণ করেন। নির্ধারিত লগ্নেই শুরু হয়ে যায় বিয়ে। ভুবনবাবুই ছেলের বিয়ে দেন। বিয়ে শুরু হতেই মনোতোষের বুকটা কেমন যেন ঢিপঢিপ করতে শুরু করে। শুভদৃষ্টির সময় সেটা আরও বেড়ে যায়। ছন্দাকে পিড়িতে চাপিয়ে যখন তার সামনে তুলে ধরা হয় তখন কাপড়ের ঘেরাটোপের মধ্যেও সে চোখ মেলে চাইতে পাচ্ছিল না। কিন্তু তার বন্ধু , ছন্দার বান্ধবীদের তাড়ায় সে যখন চোখ মেলে চায় তখন আর দৃষ্টি ফেরাতেই পারে না।মুখ থেকে পান পাতা সরিয়ে ততক্ষণে তার দিকে পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ছন্দা। তার এতদিনের দেখা মেয়েটাকে মালা চন্দনে একেবারে অন্যরকম দেখায়। অপলক দৃষ্টিতে চেয়েই থাকতে ইচ্ছে হয় তার। কিন্তু তার মধ্যেই আবার বন্ধু-বান্ধবীদের চিৎকার - ওই হবে , ওই হবে।এখনই সব দেখে নিলে সারাজীবন কি দেখবে ? আকাশের তারা ? দুজনেই লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।যথা সময়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়।সম্পন্ন হয় খাওয়া দাওয়াও। বরযাত্রীদের নিয়ে বাড়ি ফিরে যান ভুবনবাবু। বাসর জাগার জন্য থাকে প্রভাত-রুম্পা, রাজীব - খুঁকী সহ মনোতোষের কিছু বন্ধু-বান্ধব।
বাসর ঘরে যাওয়ার আগে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ছন্দা। বিয়ে বাড়ির হই হুল্লোড়ের মধ্য এতক্ষণ একটি বারের জন্যও ঠাকুমাকে দেখতে পায়নি সে। গেল কোথাই ঠাকুমা ? খুঁজতে খুঁজতে ঠাকুরঘরের কাছে পৌঁছোয় ছন্দা। দরজা ভেজানো দেখেই ঠাকুমা যে ভিতরেই রয়েছেন তা বুঝতে অসুবিধা হয় না তার। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই চমকে যায় ছন্দা। দেখে ঠাকুরের সামনে হাত জোড় করে বসে রয়েছেন ঠাকুমা। তার চোখ দিয়ে অবিরাম ধারায় গড়িয়ে চলেছে জলের ধারা। তার উপস্থিতি টের পেয়ে জল লুকাতে দ্রুত আঁচতে চোখ মোছেন শান্তিলতা। তারপর নাতনীর দিকে ফিরে -- কি দিদিভাই তুমি এ সময় এখানে কেন ? তোমাদের বাসর বসে নি ?
ছন্দা এগিয়ে গিয়ে ঠাকুরমার হাত ধরে বলে , তার আগে তুমি বল এই আনন্দের দিনে একা একা ঠাকুরঘরে চোখের জল ফেলছ কেন ?
---- কই , কখন আবার চোখের জল ফেললাম ?
---- আবার মিথ্যা কথা ?
---- তোমার দাদুর কথা ভেবে চোখের জল বাঁধ মানছিল না ভাই। মনে মনে তাকেই বলছিলাম অসময়ে আমায় ফাঁকি দিয়ে চলে গেলে তাই নাতনীর বিয়ে দেখতে পেলে না।
দাদুর কথায় ছন্দার মনটাও বিষন্ন হয়ে যায়। খুব ছোটবেলায় দাদুকে হারিয়েছে ছন্দা। তাই ভালোভাবে মনেও পড়ে না। কিন্তু ঠাকুমার মুখেই সে শুনেছে দাদু নাকি তাকে খুব ভালোবাসতেন। সে বেড়াতে পচ্ছন্দ করত বলে তাকে কাঁধে চাপিয়ে মাঠে চলে যেতেন। দাদুর কথা বলতে বলতেই চোখের জল চলে আসত ঠাকুমার। সে সান্ত্বনা দিত। আজও সে ঠাকুমাকে সান্ত্বনা দেয় , তুমি মন খারপ কোর না। দাদু ঠিক উপর থেকে সব দেখতে পাচ্ছেন , আর আমাদের আর্শিবাদ করছেন। এখন তুমি চলো তো বাসর ঘরে সবাই অপেক্ষা করছে।
ঠাকুমাকে টেনে তোলার চেষ্টা করে ছন্দা। কিন্তু নাতনী হাত ছাড়িয়ে নিয়ে শান্তিলতা বলেন , তুমি যাও ভাই। আমি বিধবা মানুষ। শুভকাজে বিধবাদের থাকতে নেই।
এতক্ষণে ছন্দা বুঝতে পারে কেন বিয়ের আসরে ঠাকুমাকে দেখা যায় নি। তাই সেও ঠাকুর ঘরের মেঝেয় বসে পড়ে। তাকে ওইভাবে বসে পড়তে দেখে শান্তিলতা বলেন , এই বললি সবাই বাসরঘরে অপেক্ষা করছে , আর এখানে বসে পড়লি যে ?
---- করুক গে অপেক্ষা। বাসর হবে না।
---- কেন দিদিভাই ?
---- যার কাছে ছোট থেকে মানুষ হয়েছি , যার ছোঁওয়ায় এতদিন শুভ ছাড়া কোন অশুভ হয় নি , সেই মানুষটার উপস্থিতি আজকের এই শুভদিনে অমঙ্গলের ছায়া ফেলে তাহলে চাই না আমার সেই শুভ , চাই না আমার সেই বাসর। এই বলে রাখলাম তোমায়।
এবারে শান্তিলতা নাতনীর হাত ধরে বলেন , লক্ষী ভাই আমার , জেদ করিস নে।
ছন্দা কোন কথা বলে না , উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। সেই সময় ছন্দার দেরি দেখে বাসরঘর থেকে এসে পৌঁছোয় মনোতোষও। ছন্দার মুখে সব শুনে সে'ও ঘোষণা করে , এই আমিও বসলাম। আপনি না গেলে বাসর হবেই না।
মনোতোষের কথায় চরম বিড়ম্বনায় পড়েন শান্তিলিতা। ততক্ষণে ঠাকুরঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন ছন্দার বাবা-মা'ও। তারাও বহুবার শান্তিলতাকে বিয়ের সব কাজে অংশ নেওয়ার জন্য সাধাসাধি করেছেন। কিন্তু ছেলে - বৌমায়ের কথা কানে তোলেন নি শান্তিলতা। ঠাকুর ঘরে এসে দোর দিয়েছেন। মেয়ে-জামাইয়ের আকুতি দেখে অতসী ফের বলেন -- যান না মা , আপনার নাতনী- নাতজামাই অত করে বলছে। আর কবে কার কি সংস্কারের কথা ভেবে আপনি যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে আমাদেরই বা কেমন লাগে ভাবুন !
আর নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকতে পারেন না শান্তিলতা। মেঘ কেটে তার মুখে ফুটে ওঠে হাসির আভাস। মৃদু স্বরে বলেন , ছেলে-মেয়ে দুটোকে নিয়ে আর পারা গেল না বাপু। কই চল দেখি।
মনোতোষ আর ছন্দা ঠাকুমাকে ধরে বাসর ঘরে নিয়ে গিয়ে সবার মাঝে বসিয়ে দেয়। বাসরে মধ্যমনি হয়ে ওঠেন শান্তিলতা। ছন্দা - মনোতোষ একটু ছাড়া ছাড়া বসেছিল , বন্ধুরা ওদের ধরে পাশাপাশি বসিয়ে দেয়। সবাই ছন্দা আর মনোকে গানের করার জন্য আবদার করে। শান্তিলতাও বলেন , গা না ভাই দুজনে একটা গান। সেই আবদার ফেলতে পারে না ওরা। এক সঙ্গে গেয়ে ওঠে----
"খেলা ঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে,
কতরাত তাই তো জেগেছি - - - - - বলব কি তোরে।।
প্রভাতে পথিক ডেকে যায়----অবসর পাইনে আমি হায়
বাহিরের খেলায় ডাকে সে যাব কি করে--------------।। "
গান শুনে মোহিত হয়ে যায় সবার মন। ছন্দা-মনোতোষের মুখের দিয়ে চেয়ে থাকেন শান্তিলতা। সেটা লক্ষ্য করে মনোতোষ আর ছন্দার বন্ধু-বান্ধবীরা বলে উঠে , কি ঠাকুমা তোমাদের আজকে দিনটার কথা মনে পড়েছে ? সেদিনের কথা আমাদের বলো না।শান্তিলতা কোন কথা বলেন না। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বসে থাকেন। তারপর যেন আপন খেয়ালেই গেয়ে ওঠেন --- " ভরা থাক্ স্মৃতিসুধায় বিদায়ের পাত্রখানি / মিলনের উৎসবে তায় ফিরায়ে দিয়ো আনি / বিষাদের অশ্রুজলে নীরবের মর্মতলে./ গোপনে উঠুক ফলে হৃদয়ের নূতন বাণী / যে পথে যেতে হবে সে পথে তুমি একা / নয়নে আঁধার রবে, ধেয়ানে আলোকরেখা / সারা দিন সঙ্গোপনে সুধারস - - - - - - - ।। "
গান শেষ হয়ে যায় , কিন্তু অনেকক্ষণ তার রেশ থেকে যায়। সেই মাধুর্য নষ্ট হয়ে যাবে বলে কেউ কোন কথা বলে না। দীর্ঘক্ষণ শান্তিলতাকে জড়িয়ে বসে থাকে তারা। ওই ভাবেই একের পর এক গান , আবৃত্তি আর গল্পে শেষ হয় বাসর রাত্রি। সকাল হতেই বিয়ে বিদায়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। সংস্কারের ছুৎমার্গ সরিয়ে সমস্ত আচার শেষে ছন্দাকে ছেলে-বৌমায়ের সংগে পালকিতে তুলে দিতে যান শান্তিলতাও। সবাই কেঁদে ভাসান। চোখের জল ধরে রাখতে পারে না ছন্দাও। পালকিতে ওঠার আগে ছন্দার হাতটা মনোতোষের হাতে তুলে দিয়ে অতসী বলেন , বাবা আমার একমাত্র মেয়েকে আজ তোমার হাতে তুলে দিলাম। তুমি যেন সবসময় ওর পাশে থেক।মনোতোষ কোন কথা বলতে পারে না কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে সুখ, দুঃখ, বিপদ- আপদ সব ক্ষেত্রেই আমি ওর পাশে থাকব।তারপরই রীতি মেনে উল্টো দিকে মুখ করে মায়ের আঁচলে একমুঠো চাল ছুড়ে দিয়ে " মা তোমার সব ঋণ শোধ করলাম " বলে পালকিতে গিয়ে ওঠে ছন্দা।
আর তখন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে অতসী। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। শান্তিলতা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন , শান্ত হও মা। এটাই আমাদের সমাজের নিয়ম। একদিন তুমিও ওই ভাবেই মায়ের ঋণ শোধ করে এ বাড়ির বৌ হয়ে এসেছিলে। পালকি চোখের আড়াল হলে বৌমাকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে যান শান্তিলতা।
পালকিতে আসতে আসতে মনোতোষ ছন্দার হাতটা নিজের হাতে তুলে নেয়। মনোতোষের দিকে ফিরে তাকায় ছন্দা। তখনও তার চোখের কোনে চিক চিক করছে জল। পরম মমতায় সেই জল মুছিয়ে দেয় মনোতোষ। ছন্দা মনোতোষের একটা হাত গালে চেপে ধরে।আচমকা শাঁখের আওয়াজ আর উলুর ধ্বনিতে সম্বিত ফেরে ছন্দার।সে দ্রুত মনোতোষের হাত ছেড়ে দেয়। চোখ মেলে দেখে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁচ্ছে গিয়েছে পালকি। তাদের বরণ করার জন্য বরণডালা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কাকীমা। মনে মনে কাকীমা শব্দটা উচ্চারণ করেই থমকায় ছন্দা। আর কি তার কাকীমা বলা ঠিক হবে ? হিসাব মতো এবার তো কাকু - কাকীমাকে তার বাবা-মা বলারই কথা। কিন্তু এতদিনের অভ্যাস বদলাতে খুব লজ্জা করে তার। মনোদা কিন্তু বদলে ফেলেছে সব অভ্যাস। তার ঠাকুমাকে তো ঠাকুমা বলতই , বাবা-মা'কেও বাবা-মা বলতে শুরু করে দিয়েছে। এমন কি তাকে তুই থেকে তুমি বলাও রপ্ত করে নিয়েছে। তাই নিয়ে কাল বাসরঘরে সবাই ওর পিছনে লেগেছিল। কিন্তু মনোদা ভুলেও আর একবারও তাকে তুই বলে নি। মনোদা যদি পারে তাহলে সে'ই বা পারবে না কেন ? তাকে পারতেই হবে।
পালকি থামতেই সাধনা নতুন বৌয়ের হাত ধরে নামান। তারপর বরণ করে ঘরে তোলেন। দুধে-আলতায় পা ডুবিয়ে মা লক্ষীর পায়ের ছাপ ফেলতে ফেলতে ঘরে ঢোকে ছন্দা।নতুন বৌ দেখে আত্মীয় স্বজনেরা খুব সুখ্যাতি করেন। ছন্দাকে বৌয়ের রূপে দেখে সাধনাও উছ্বসিত হয়ে উঠেন।হাত ধরে ছন্দাকে সিংহাসনে বসিয়ে দেন। শুরু হয় আর্শিবাদের পালা। নিমন্ত্রণ পত্রে লিখে দেওয়া হয়েছিল, ভুবনবাবু নিমন্ত্রণ করার সময়ও জনে জনে বলে দিয়েছিলেন, আর্শিবাদের সময় কেউ কোন উপহার দেবেন না। আমরা নিতে পারব না। গ্রামের নিমন্ত্রিতরা আসবেন সেই সন্ধেবেলা বৌ-ভাতের সময়। কিন্তু আত্মীয় স্বজনরা তো আগেই এসে পড়েছেন। তারা কিন্তু কোন কথাই শোনেন না। নতুন বৌকে আর্শিবাদের পর একটা করে উপহার এগিয়ে দেন। বিয়ের আগে ভুবনবাবুর কথাটা ছন্দাও শুনেছিল। তাই সে উপহার হাতে ধরার আগে সাধনার দিকে চেয়ে বলে -- ও মা কি করব ?
ছন্দার মুখে মা ডাক শুনে অভিভুত হয়ে যায় সাধনা। ডাকটা বড়ো মিষ্টি লাগে তার। কিন্তু উপহার নেওয়া - না নেওয়া নিয়ে বড়ো দোটানায় পড়তে হয় তাকে। উপহার নিলে স্বামী কি মনে করবেন কে জানে ! আবার না নিলে যারা উপহার দেওয়ার জন্য এনেছেন তাদের আত্মসম্মানে ঘা লাগতে পারে। তার জেরে তারা হয়তো সম্পর্কটাই চুকিয়ে দিতে পারেন। সেই বিষয়টি পরে মনোর বাবাকে বুঝিয়ে বললেই হবে। সেই ভেবে ছন্দাকে বলেন , কি করবে মা , ওনারা ভালোবেসে দিচ্ছেন যখন নাও। ভালোবাসার জিনিস ফিরিয়ে দিতে নেই যে মা।
--- কিন্তু বাবা রাগ করবেন না তো ?
---- সে না হয় তোমার বাবাকে বুঝিয়ে বলব ক্ষণ।
মায়ের পর ছন্দার মুখে বাবা সম্বোধনটা শুনে আবার কান জুড়িয়ে যায় সাধনার। এতদিন তারা কেবল মনোরই বাবা-মা ছিলেন। এবার থেকে দু'জনের বাবা-মা হলেন তারা। ছন্দার মুখে বাবা ডাক শুনে মনোর বাবার ও খুব ভালো লাগবে।ছন্দাকে তো তিনি নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসেন। তার মধ্যেই রুম্পারা এসে পড়ে। ওদের কাছেই ছন্দাকে রেখে বাইরে আসেন সাধনা। বৌ-ভাতের তদারকিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয় তাকে। তদারকি করার জন্য অবশ্য স্বামীর সান্ধ্য আসরের বন্ধু, কিছু সহকর্মী, অম্লানবাবুরা রয়েছেন। কিন্তু কোথাই কি আছে তা সবার জানা নেই। তাই হরদম ডাক পড়ে সাধনার। সেইজন্য তাকেও কাছে পিঠেই থাকতে হয়। বৌ-ভাত রাতে , কিন্তু গ্রামের দিকে সন্ধ্যার মধ্যেই খাওয়া দাওয়ার রেওয়াজ। সেই জন্য দুপুর থেকেই রান্না- বান্না শুরু হয়ে যায়।শেষ হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।সন্ধ্যা থেকেই চারিদিকে জ্বলে ওঠে রঙিন আলো।
গোটা বাড়িটা যেন মোহময় হয়ে উঠে। নিমন্ত্রিতরা একে একে এসে পৌঁছোন। অধিকাংশরই দেখা মেয়ে , তবু বধূ বেশে ছন্দাকে দেখে সবাই বলেন , না ছেলের জন্য মনোর বাবা-মা দেখে শুনে একখানা বৌ'মা করেছেন বটে। একেই বলে ঘর আলো করা বৌ।ছন্দার প্রশস্তি শুনতে শুনতে কান জুড়িয়ে যায় সাধনার।খাওয়া দাওয়া চুকতে অনেকখানি রাত হয়ে যায়। শেষ ব্যাচে অন্যান্যদের সংগে ছন্দাকে নিয়ে খেতে বসেন সাধনাও। আজ তো কালরাত্রি। বর - বৌয়ের মুখ দেখাদেখি নিষিদ্ধ। তাই আজ ছন্দা তার কাছেই থাকবে। ছন্দা - মনোতোষও কথাটা শুনেছে। কিন্তু চোখ সেই নিষেধ মানছে কই ? সে যে নিভৃতে খুঁজে চলছে প্রিয় দুটি চোখ।
( ক্রমশ )
No comments:
Post a Comment