Short story, Features story,Novel,Poems,Pictures and social activities in Bengali language presented by Arghya Ghosh

ঠাকরুন মা -- ৩৯ /


  


     ঠাকরুন মা 


        অর্ঘ্য ঘোষ 



  ( ধারাবাহিক উপন্যাস ) 



সুবিচারের প্রত্যাশা নিয়েই বাড়ি ফিরে আসে অন্নপূর্ণা । ঠিক হয় রায় ঘোষণার পর রঞ্জুকে নিয়ে গ্রামে যাবে সন্দীপন। রায় বেরনোর প্রতীক্ষায় দিন কাটে অন্নপূর্ণার। রায়ের উপরেই নির্ভর করে আছে তার ভবিষৎ।বাড়িতে পুলিশ পাহারা থাকায় তিনআনিরা সরাসরি কিছু করতে পারছে না। কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছে তারা। হাওয়ায় ভাসিয়ে দিচ্ছে নানা রকম হুমকি। শ্রীমতী-যোগনাথের মাধ্যমে বাহিত হয়ে সেইসব হুমকি অন্নপূর্ণার কানে এসেও পৌঁছোয়। কোনদিন শোনা যায়, তিনআনিরা নাকি বলে বেড়াচ্ছে উচ্চআদালতেও কিচ্ছু হবে না। কেসের গোঁড়া তো নিম্ন আদালতেই মেরে  দেওয়া হয়েছে। কোনদিন বা বলে , পুলিশ আর কতদিন পাহারা দেবে ? মামলার রায়টা একবার বের হোক , তারপর দেখছি। ওইসব কথাবার্তা থেকেই তিনআনিদের আক্রোশের আঁচ পায় সে। সুযোগ পেলে তারা যে সেই আক্রোশ কড়ায় গন্ডায় মিটিয়ে নিতে পিছুপা হবে না তাও সে জানে। নিজের জন্য ভয় সে আর পায় না। ছেলেমেয়ে দুটো বিশেষ করে শিখার জন্য খুব দুশ্চিন্তা হয় তার। মেয়েটার মনটা খুব নরম। তেমন হলে ওর জন্যই তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই সে দিনরাত ঠাকুরের কাছে সুবিচারের প্রার্থনা জানায়। অবশেষে আসে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রায় বেরনোর দিন। সেদিন সকাল থেকেই তিনআনিদের মেয়ে -বৌ'রা  কালী , রাধারমণ এবং দুর্গাবাড়ির দখল নিয়ে নেয়।ঢাক-ঢোল ,পাঁঠা বলি সহ  পুজোর বিশাল আয়োজন তাদের। অন্নপূর্ণার ভাসুর-জা'রাও যোগ দেয় সেই পুজোয়। সকাল বেলায় স্থান করে ধোপদুরস্ত পোশাক পড়ে সাজি ভর্তি ফুল নিয়ে তারাও ঠাকুরতলায় হাজির হয় ঠাকুরতলায়। তিনটে পাঁঠা বলি হবে। তা দিয়েই  নিম্ন আদালতের রায় বেরোনোর দিনের মতোই এলাহি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তাদের হাবভাবেই মনে হচ্ছে মামলা তারা জিতেই বসে আছে , রায় ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। ওদের ওইসব আচারণ  দেখে ঘাবড়ে যায় অন্নপূর্ণা। দুর থেকেই সে ঠাকুরকে ডাকে আর রায়ের খবরের প্রতীক্ষা করে। কিন্তু সময় যেন আর কাটতে চায় না। উদ্বেগে কিছু মুখেও তুলতে পারে না। শি খা কতবার খাবার নিয়ে এসে তাকে সাহস যোগায় , মা তুমি দুশ্চিন্তা কোর না। আমার মন বলছে দেখো ভাল খবরই আসবে। গৌরবও একই কথা বলে।তবুও শান্ত হয় না অন্নপূর্ণার মন। ঠাকুরতলা থেকে তখন মাইকে তারস্বরে ভেসে আসে মন্ত্রোচ্চারণ।মাঝে মধ্যে ঢাক-ঢোল আর সমবেত উচ্ছাস ধ্বনি। কিন্তু মাঝপথেই আচমকা থেমে যায় সব শব্দ। যেন শ্মশানের স্তব্ধতা নেমে আসে ঠাকুর তলায়। সেই সময় বেজে ওঠে শিখার ফোন। ফোনটা নিয়ে শিখা ছুটে আসে ঘরে। ফোনটা শাশুড়ির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে -- মা সন্দীপনদার ফোন। আদালত থেকেই ফোন করছে। 
দুরু দুরু বুকে ফোনটা নিয়ে অন্নপূর্ণা খুব মৃদু স্বরে বলে --- হ্যা বলো সন্দীপন কি খবর ? 
---- মাসিমা খুব ভালো খবর। মামলাটা আমরা জিতেছি। ওদের সবার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এমনকি মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য আপনার দুই ভাসুরের এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। টাকা না দিলে ওদের বাড়ি নিলাম করে টাকা আদায়েরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কথাটা শুনেই অন্নপূর্ণার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। আবেগ বিহল গলায় সে বলেন , সবই অসীমবাবু আর তোমাদের জন্য সম্ভব হল বাবা। যে দৌড়ঝাঁপ করলে তোমরা। এতদিনে গৌরবের বাবার অতৃপ্ত আত্মা শান্তি পাবে। অসীমবাবুর দেখা না পেলে এই বিচার হয়তো কোনদিনই হতো না। 
---  ঠিকই বলেছেন। রায়ের সার্টিফাই কপি নিয়ে আমি আর রঞ্জু আজই রওনা দেব। তার আগেই অবশ্য আদালত থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁচ্ছে যাবে। জ্যেঠুও জেলাশাসক আর জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন করে বলে দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব ওদের গ্রেফতার করে জেলে ঢোকাতে হবে। যেন কেউ পালাতে না পারে।দেখুন হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামে পুলিশ ঢুকে যাবে। 


                     এতক্ষণে মাঝপথে তিনআনিদের মন্ত্রোচারণ থেমে যাওয়ার কারণটা অনুমান করতে পারে অন্নপূর্ণা। তাদের কাছেও নিশ্চয় ফোনে মামলার রায়ের খবরটা পৌঁচেছে। ফোনটা ফিরিয়ে দিতেই শিখা জড়িয়ে ধরে শাশুড়িমাকে। ফোনের কথোপকথন শুনে সেও রায়ের বিষয়টি জেনে ফেলেছে। তাই সে বলে , মা যা বলেছিলাম হোল তো ? 
অন্নপূর্ণা বৌমাকে বুকে টেনে নিয়ে বলে , সবই তোমার পয়ে হয়েছে মা। তুমি এ বাড়িতে বৌ হয়ে আসার পর থেকেই সব কিছু ভালো হচ্ছে।
শাশুড়ি মায়ের কথা শুনে খুব ভালো লাগে শিখার। আবার লজ্জাও লাগে।লজ্জা এড়াতে বলে , আসলে মা ওদের পাপ পরিপূর্ণ হয়ে উঠছিল তাই আর নিস্তার পেল না।
---- ঠিক বলেছো দিদিভাই। পাপে ওদের ষোলকলা পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। 
বলতে বলতে এগিয়ে আসেন গোমস্তাকাকা। তার পিছনে শ্রীমতী আর যোগনাথ। তাদের দেখে অন্নপূর্ণা রায়ের খবরটা বলার উপক্রম করতেই গোমস্তাকাকা বলে ওঠেন , আর বলতে হবে না মা ঠাকুরতলায় ওদের চোখমুখের অবস্থা দেখেই বুঝে গিয়েছি রায় কি হয়েছে। সব একেবারে মিইয়ে গিয়েছে।
হঠাৎ দুরে শোনা যায় জীপের আওয়াজ। চকিতে সেই দিনটার কথা মনে পড়ে যায় অন্নপূর্ণার। সেদিনও জিপের আওয়াজ শুনে ছুটে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল সে। গিয়েই দেখতে পেয়েছিল স্বামীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্বামীর মৃতদেহ আঁকড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। বহু মানুষ দাঁড়িয়ে দেখেছিল। একজনও এগিয়ে এসে কাঁধে রাখে নি সান্ত্বনার হাত।মর্মান্তিক সেই দৃশ্যটা চোখের সামনে ছবির মতো ভেসে ওঠে। সেদিনের মতোই সে আজও তিনআনিদের বাড়ি অভিমুখে ছুটে যায়। তার পিছনে পিছনে ছোটে গোমস্তাকাকা , শিখা, শ্রীমতীরাও।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হকচকিয়ে যায় তিনআনিরা। গাঢাকা দেওয়ার উপক্রম করছিল তারা। কিন্তু তারা ভাবতেই পারে নি এত দ্রুত পুলিশ পৌঁছে যাবে। তবুও কেউ কেউ পালাবার উপক্রম করে। পুলিশ তাদের ঘিরে ধরে। তার মধ্যেও ওদের ছোটকর্তা ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। সেটা দেখেই  অন্নপূর্ণা ছুটে গিয়ে তার পথ আটকে দাঁড়ায়। তখন তাকে দেবী দুর্গার মতো দেখায়। আর পালাতে গিয়ে অন্নপূর্ণার পায়ের সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে তিনআনিদের ছোটকর্তা। প্রাণের বিকুলিতে অন্নপূর্ণার পা ধরে বলে , তুমি যা চাইবে তাই দেব। তোমাদের পুকুরটাও ফিরিয়ে দেব। আমাকে ছেড়ে দাও। পুলিশ ধরতে পারলে আমাকে খুব মারবে।


                মারের কথা শুনেই ফের স্বামীর রক্তাক্ত দেহটা তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। দু'চোখে যেন আগুন জ্বলে উঠে। সে ছোটকর্তার চুলের মুঠি ধরে বলে , যা চাইব তাই দিবি ? পারবি সেই মানুষটাকে ফিরিয়ে দিতে ? পারবি আমার ছেলেমেয়েগুলোকে ফিরিয়ে দিতে ?
সপাটে তার গালে একটা চড় কসিয়ে দিয়ে মুখে একদলা থুতু ছুড়ে দেয় অন্নপূর্ণা। ততক্ষণে পুলিশ এসে ধরে তাকে।গ্রামের লোক তখন ভেঙে পড়েছে সেখানে। তাদের সামনে দিয়েই কোমরে দড়ি পড়িয়ে একে একে সাতজনকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। তারপর ওসি অন্নপূর্ণার সামনে এসে বলেন , মা আদালতের নির্দেশ পালন করার জন্য আপনার দুই ভাসুরের কাছে আমাদের একবার যেতে হবে। আপনারও সেখানে যাওয়া প্রয়োজন।
ওসির কথা শুনে দোটানায় পড়ে অন্নপূর্ণা। সে প্রতিজ্ঞা করেছিল অভিশপ্ত ওই বাড়িতে আর কোনদিন পা রাখবে না। অফিসার বোধহয় বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেন। তাই অনুনয়ের ভঙ্গিতে বলেন , আমাদের মুখ চেয়ে একবারটি চলুন। ঘরের ভিতরেও আপনাকে ঢুকতে হবে না। দরজার বাইরে থেকেই আপনার করণীয় কাজটুকু হয়ে যাবে।
আর কথা ঠেলতে পারে না অন্নপূর্ণা।অফিসারকে অনুসরণ করে জমিদারবাড়ির দিকে এগোতে থাকে সে।শিখা , গৌরব, গোমস্তাকাকারাও তাকে অনুসরণ করে। অনুসরণ করে গ্রামের লোকও। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাদের তেড়ে গিয়েও দুরে সরাতে পারে না। তাড়া খেয়ে সাময়িক সরে যায়। তারপর ফের গোল করে ঘিরে ধরে। বাড়ির বন্ধ দরজার সামনে পৌঁছে অফিসার অন্নপূর্ণার দুই ভাসুরের নাম ধরে চিৎকার করে ডাকেন। কিন্তু কারও কোন সাড়া মেলে না। বার কয়েক ডাকার পরও সাড়া না পেয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন অফিসার। কড়া মেজাজে সুর চড়িয়ে বলেন, তখন আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়ার সময় মনে ছিল না। ভালো চান তো সুর সুর করে দরজা খুলে বেরিয়ে আসুন বলছি। আর আমাদের যদি দরজা ভেঙে ঢুকতে হয় তখন কিন্তু মুখে নয় , কথা বলবে আমাদের হাতের রুলার।


                            সেই ধমকেই কাজ হয়। দরজা খুলে চোরের মতো সামনে এসে দাঁড়ান অন্নপূর্ণার দুই ভাসুর। পিছনে পিছনে দুই জা'ও আসেন। তাদের দেখেই ধমকে ওঠেন অফিসার -- এতক্ষণ ধরে ডাকছিলাম ,  কথা কানে যাচ্ছিল না ? 
---- শুনতে পাই নি স্যার , মিনমিন করে ভাসুররা বলেন।
--- ফের মিথ্যা কথা ? আপনাদের মতো লোককে লকআপে ভরে চাবকানো উচিত। কিন্তু আদালত তো সেই রায় দেয় নি , তাই আর কি করা যাবে ? তবে যেটা নির্দেশ দিয়েছে সেটা কান খুলে শুনে নিন , আদালতে মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়ার দায়ে এই মুহুর্তে আপনাদের এক লক্ষ টাকা জরিমানা অন্নপূর্ণাদেবীর হাতে তুলে দিতে হবে।
--- এই মুহুর্তে দুরের কথা এই জীবনেও আর অত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই।
--- তাহলে আর কি, বাড়ি নিলাম করে টাকা তুলতে হবে। 
---- আমরা তাহলে কোথায় যাব ? 
---- কোথাই আর ? ভিখারিরা যেখানে যায় , গাছতলা কিম্বা ফুটপাত।
তারপর অন্নপূর্ণার দিকে চেয়ে অফিসার ফের বলেন , মা আপনি চাইলে এই বাড়ির দখল নিতে পারেন। আমরা দাঁড়িয়ে থেকে ওদের বের করে আপনাকে বাড়ির দখল দিয়ে যাব। নাহলে বাড়ি নিলামে চড়িয়ে আপনার হাতে টাকা তুলে দেব। আদালতের সেই রকমই নির্দেশ আছে। 
অফিসারের কথা শুনে অন্নপূর্ণার দুই ভাসুর কাচুমাচু হয়ে বলে ওঠেন -- বৌমা এই বাড়িটা তোমারই। আজ থেকে তোমরা সবাই এই বাড়িতেই থাকবে। তুমি যে করেই হোক বাড়িটাকে বাঁচাও।
ভাসুরদের কথা শুনে বিদ্রুপের হাসি ফুটে ওঠে অন্নপূর্ণার মুখে। শ্লেষের সুরে সে বলে , ভালো বললেন তো দাদা। আদালতের রায়ে বাড়িটা বেহাত হতে চলেছে দেখে বলছেন বাড়িটা আমারই। বাড়িটা বাঁচাও।বাড়িটা যখন আমার হাতে আসছে তখন বাঁচাতে তো হবেই।
---- বাড়িতে আমাদের যাতে একটু ঠাঁয় হয় তা তুমি দেখো বৌমা।
সেই সময় অন্নপূর্ণার দুই জা এসে বলে , সে কি আর ছোট আমাদের ফেলে দিতে পারবে ? ও তো আমাদের ছোট বোনের মতো। বোন থাকতে কি দিদিদের গাছ তলায় গিয়ে দাঁড়াতে হয় ? 
---- কথাটা বলতে তোমাদের লজ্জা লাগছে না ? 
---- বোনের কাছে দিদিদের আবার লজ্জা কি ? 
----সেই জন্যই বুঝি বোনের শত্রুদের মঙ্গলের জন্য দিদিরা সকাল থেকে ঠাকুরতলায় হত্যে দিয়ে পড়েছিল ? এখন বেকাদায় পড়ে বোনের প্রতি দরদ উথল উঠল ? একটা কথা অবশ্য তোমরা ঠিকই বলছ , তোমাদের আবার লজ্জা কিসের ? কিন্তু তোমাদের দেখে এখন আমারই লজ্জা পাচ্ছে। সেদিন যখন এই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলে তখন একবারও ভেবেছিলে আমাদের কথা ? বাড়ি থেকে বের করে দিয়েও আশ মেটে নি। টাকার জন্য খুনীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতেও বিবেকে বাধে নি তোমাদের।
এবার ভাসুররা বলেন , আজ বুঝতে পারছি সত্যি আমরা অন্যায় করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কি কোন ক্ষমা নেই।
---- না আপনারা ক্ষমারও অযোগ্য। আপনাদের শাস্তি পেতেই হবে।
ভাসুর -- জা'রা আর কেউ কোন কথা বলতে পারে না।
অন্নপূর্ণা অফিসারের উদ্দেশ্যে বলে, শুনুন অফিসার যে বাড়িতে আমার শ্বশুর-শাশুড়ির ঠাঁই হয় নি , স্বামী-সন্তানদের নিয়ে যে বাড়ি থেকে আমাকে এক কাপড়ে চোরের মতো গলা ধাক্কা খেয়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে সেই বাড়ি আমার কাছে অভিশপ্ত। অভিশপ্ত বাড়িতে মরে গেলেও আমি আর পা রাখতে পারব না। আর বাড়ি বিক্রির টাকাও হাতে তুলে নিতে পারব না।
 --- তাহলে বাড়িটার কি হবে ? প্রশ্ন করেন অফিসার।
---- কি আর হবে ? আমি থাকতে আমার আপনারজনেরা ভিটেমাটি হারিয়ে ফুটপাত কিম্বা গাছতলায় পড়ে থাকবে তা তো আর হয় না। ওই অভিশপ্ত বাড়িতেই ওদের থাকতে হবে। সেটাই হবে ওদের শাস্তি। বাড়ির ইট-কাঠ-পাথর মনে পড়িয়ে দেবে ওদের কৃতকর্মের কথা। বিবেকের দংশন বাড়ির একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে। দিন কোথাই কি সই করতে হবে দিন। 
অফিসার টাকার প্রাপ্তিস্বীকার পত্রটা এগিয়ে দেন। তাতে সই করে দিয়ে আর কোনদিকে তাকায় না অন্নপূর্ণা।জমিদারবাড়ির দরদালান ছেড়ে সে দীপ্ত ভঙ্গিতে হেঁটে চলে নিজের ভাঙাচোরা বাড়ির দিকে।সবাই বাক্যহারা হয়ে তার গমন পথের দিকে চেয়ে থাকে।


          ( সম্পূর্ণ )




শীঘ্রই আসছে নতুন ধারাবাহিক ----




         নজর রাখুন / সঙ্গে থাকুন ।

No comments:

Post a Comment